বারবার ডাকলেও বিএনপি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংলাপে যাবে না বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ‘কুরুচিপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসতে চেয়েছিল। আমরা সেখানে যাইনি কারণ আমরা নির্বাচন কমিশন বুঝি না, নির্বাচন কমিশন চিনি না, মানি না। আমরা চাই এই সরকার থাকবে না। সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা যাব।
সিইসি বলেছেন, বিএনপিকে বারবার ডাকবো। আপনাকে সাধুবাদ জানাই। বারবার ডাকবেন এই কারণে যে, বিএনপিকে ছাড়া আপনি নির্বাচন করতে পারবেন না। বাংলাদেশে কারো সাধ্য নেই বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করা। এই ব্যর্থ, দুর্বৃত্ত সরকারকে আমরা কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেবো না। আপনারা ক্ষমতা ছাড়েন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন। তারপর যদি ক্ষমতায় আসেন আপনাদের আমরা মাথায় তুলে নাচবো। বিনা নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকবেন এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনো মানবে না।
তিনি বলেন, কাদের সাহেব বলেন বিএনপি নির্বাচনে না এলে কিছু আসে যায় না। সিইসি বলেন বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না। বিএনপি ছাড়া নির্বাচন হবে না; দেশের মানুষ বোঝে, আওয়ামী লীগ বোঝে, সিইসি বোঝে কিন্তু এই সরকার বোঝে না। কারণ সরকার জানে নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই, নির্বাচন ছাড়াই তারা আবারও ক্ষমতায় আসবে। এই সরকারকে আর এ দেশের মানুষ চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের যথা সময়ে পানিতে ডুবিয়ে মারা হচ্ছে, যথা সময়ে আবার তিস্তা ব্যারাজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা একবার পানিতে ডুবে মরি আবার খরায়। অথচ এই সরকারের কোনো কথা-বার্তা নেই।
পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে আব্বাস বলেন, পদ্মায় না হয় বুঝলাম খরস্রোতা নদীতে পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়েছিল। ঢাকা শহরেও কি পাইলিংয়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে না কি? আবার মেট্রোরেলের খরচ বেড়ে গেল। এক-এগারোতে মাইনাস টু না, মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক-এগারোতে সবাই ভেবেছিল মাইনাস টু ফর্মুলা হয়েছে। মাইনাস টু না, আসলে মাইনাস টু ওয়ান। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার প্ল্যান ছিল। সেই প্ল্যান অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমি কারাগারে ছিলাম। আরও অনেকে ছিল। আওয়ামী লীগের অনেকে লোক ছিল। কাদের সাহেবও ছিলেন। আমি কাদের সাহেব সম্পর্কে দুকথা ১০ জায়গায় বলেছিলাম। যা বলি সত্যি বলি, মিথ্যা তো বলি না! মিথ্যা বলার অভ্যাস আমার নেই। কাদের সাহেব আর আমি পাশাপাশি থেকেছি। উনার সম্পর্কে দু-একটি কথা কি জানি না? বলতে কি পারি না? উনিও আমার সম্পর্কে বলতে পারবেন। এ জন্য অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। রাজনীতি করি, সহনশীল মনোভাব থাকতে হবে। আমি কারো কথা মানি বা না মানি, কথা বলার অধিকার তাকে দিতে হবে। কথা বলার অধিকার আছে বলেই তারেক রহমান সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলবেন, বাজে কথা বলবেন, প্রশ্ন রাখেন তিনি। তারেক রহমান সম্পর্কে মন্তব্য করায় ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই বিএনপি নেতা।