মুন্সীগঞ্জে সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নে নাহাপাড়া গ্রামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রভাবশালীরা অবাধে বালু উত্তোলন করছে। এতে রাস্তা, ফসলি জমি, মসজিদ এবং ঘরবাড়ি হুমকিতে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা পুকুর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে জাহাঙ্গীর মেম্বার ও শ্যামলের নেতৃত্বে। সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা উপজেলা সদরের মদিনা বাজারের পশ্চিম পাশ থেকে দিঘী থেকে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা পুকুর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে করছে। এতে দিঘীর দুই পাশের রাস্তা, মজিদ, আবাসিক বাড়িঘর দেবে যাবে এবং বিল্ডিংও ভেঙ্গে যাবে। নাম ও পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক নদ তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান, প্রভাবশালী মাটি ও বালু ব্যবসায়ীরা অনুরোধ সত্ত্বেও বালু ও মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছেন। সারা দিনরাত ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। মাটি কাটার কারণে দিঘীর দুই পাশে রাস্তা, মসজিদ, ফসলি জমি ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। তারা আরও বলেন, প্রভাবশালী বালু ও মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগ করে প্রতিকার মেলেনি। মাঝে মাঝে প্রশাসন থেকে অভিযান চালিয়ে মেশিনপত্র জবাদ করা হলেও দু’ তিন দিন পর আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ অবস্থা বিরাজ করলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দিঘীর দুই পাশের রাস্তা, পাশের ফসলি জমি, ভিটে ও বাড়িঘর ধসে গর্ভে বিলীন হবে। দিঘীর পাশের বাড়ি আসমা জানান, জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সদর থানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারি কমিশনার ভূমি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। প্রায় এক মাস অতিক্রম হলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন লোকজন এসে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করেননি। আসমা বেগম জানান, জাহাঙ্গীর মেম্বার পিতা মৃত মজিবুর শেখ এরা ভূমিদস্যু। তার স্বামী,সন্তান, দেবর প্রবাসী। বৃদ্ধ শ^াশুড়ী, জ্যা ও ছোট ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে বসবাস করছি। বেআইনীভাবে ড্রেজার বসিয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন দিঘী হতে মাটি কেটেনিয়ে বিক্রি করছে দেদারছে। তার শ^শুরের জায়গা থেকেও জোর পূর্বক পেশী শক্তির বলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করে আসছে। ফসলি জমি ও ধানী জমি অনেকাংশে ইতিমধ্যে দেবে গেছে এবং ফাটল ধরেছে। প্রবাসের সারাজীবনের কষ্টর্জিত অর্থ দিয়ে তৈরীকৃত বাড়ি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় বাড়ি ও বসতভিটা, ফসলি জমি বিলিন হয়ে পুকুরে নেমে যাবে। ড্রেজার দ্বারা দিঘী হতে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনে বাঁধা দিলে অকথ্য ভাষায় নোংরা ও অশালীণ ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করতে উদ্যত হয়। এ বিষয় নিয়ে প্রশাসনের কাছে বেশী গেলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করে লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয়। এ বিষয়ে সদর থানায় ১১ জুন লিখিত অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাননি বাদী আসমা ও তার পরিবার। পুলিশ আসলে তারা চলে যায় পরক্ষেই আবার ড্রেজার চালু করে এবং ভয়ভীতি দেখায় এবং হুমকি প্রদান করে। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বলে জানা যায়, দিঘীতে তার বাবার অংশ রয়েছে।
তাই তার বাবার অংশ দিয়েই ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটছি। দিঘী থেকে মাটি কাটার বিষয় শ্যামলের সাথে মোবাইল ফোন দিলে ফোন রিসিভ করেনি। অপরদিকে সিপাহীপাড়া টু আলদী সড়কে উচু করে ড্রেজারের পাইপ নিয়ে সরকারি দিঘীর মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ বিষয় সড়ক ও জনপদকে জানালে তারা বলছেন লিখিত নোটিশ করা হবে তিন দিনের মধ্যে ভেঙ্গে না ফেললে প্রশাসনের লোকজন নিয়ে ভেঙ্গে ফেলা হবে। দিঘীর মাটি কাটার বিষয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকত হোসাইন মো: আল জুনায়েদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে লোক পাঠানোর পর দিঘীর মাটি কাটার সত্যতা পেয়েছি। মাটি কাটার বন্ধ কওে দিয়েছি। আবার মাটি কাটলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন ভুক্তভোগীদের কোর্টে মামলা করার জন্য প্ররামশ দেন।