বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বাহাদুরাবাদ-বালাসীঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রী হয়রানী চরমে পৌঁছিছে। দুই ঘাটে প্রভাবশালী ইজারাদার সোহানুর রহমান সিন্ডিকেট করে যাত্রীদের কাছে দুইশত টাকা লঞ্চ ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি অজুহাত দেখিয়ে অবৈধ ভাবে ইঞ্জিন চালিত নৌকা দিয়ে যাত্রী পারাপার করে অসছেন। ফলে ইজারাদার সোহানুরের দাপটে যাত্রীরা অনুমোদিত লঞ্চের পরিবর্তে বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভরা প্রমত্ত যমুনা পারি দিচ্ছেন। যাত্রিদের অভিযোগ,যে কোন সময় ভরা নদীতে নৌকা ডুবির ঘটনায় প্রাণ হানী ঘটে যেতে পারে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতি‘র অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৩১জুলাই অবৈধ ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল বন্ধের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। জানাযায়,তৎকালিন বৃটিশ সরকার রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গে যাতায়াত সুবিধার্থে ১৯৩৮ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের অধীনে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট এবং গাইবান্দা জেলার ফুলছড়ির তিস্তামুখ ঘাট রেল ফেরি চালু করেন।১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় বালাসী ও বাহাদুরাবাদ ঘাট দু’টি নিচিহ্ন হলে ঘাটের অবকাঠামো পরিবর্তন করতে হয়। ফলে ১৯৮৯ সালে ইসলামপুর উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নে বাহাদুরাবাদ ঘাট এবং ফুলছড়ির তিস্তামুখ ঘাটটি সরিয়ে নিয়ে বালাসী ঘাটে স্থানান্তর করে ২০০৪ইং সাল পর্যন্ত রেল সার্ভিস চালু রাখেন। পরবর্তি ২০০৫ সালে ১৪ জুলাই বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর রেল ট্রেন যাতায়াত শুরু হলে তৎকালিন বিএনপি সরকার ফেরি সার্ভিস সম্পুর্নরুপে বন্ধ করে দেয়। ফলে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সাথে উত্তর বঙ্গের ১৩ জেলার যাতাযাত ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়।সে সময় ফেরী সার্ভিসটি বন্ধ থাকায় বৃহৎতর ময়মনসিংহের সাথে উত্তরাঞ্চলের ১৩ জেলার পণ্য সরবরাহ এবং যাত্রী পারাপারে ইঞ্জিন চালিত নৌকা একমাত্র মাধ্যম হয়ে দাড়ায়। সে সময় প্রতি বৎসর ভরা বর্ষার মৌসুমে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রমত্ত যমুনা পারাপার হতে গিয়ে ঘূর্ণিয়মান স্রোতের আবর্তে নৌকা ডুবির ঘটনায় বহুলোক মারা যায়। এমনকি নদী পারাপার হতে প্রতিনিয়ত দিনদুপুরে নৌ-ডাকাতি ঘটনা ঘটে আসছিল। তাই বর্তমান সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুই দফা অকুস্থল পরিদর্শন শেষে যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রায় ১শ ৩৬ কোটি টাকা ব্যায় করে দুই পাড়ে দৃষ্টিনন্দন ফরীঘাটসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নিমার্ণ‘সহ বিআইডব্লিউটিএ মাধ্যমে বাহাদুরাবাদ ঘাট হতে ফুলছড়ির বালাসী ঘাট পর্যন্ত নৌপথ ড্রেজিং করে নৌচলাচলের উপযোগী করে তোলেন। তার ধারাবাহ্যিকতায় গত ৯এপ্রিল/২০২২ইং তারিখে নৌ প্রতিমন্ত্রী যমুনার নৌপথে নতুন লঞ্চ সার্ভিস আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেন। বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ ৬টি লঞ্চের অনুকূলে ৬টি সার্ভিসে রুটপারমিট, সময়সূচি জারিসহ চলাচল করছে।কিন্তু ঘাটের প্রভাবশালী সোহানুর রহমান অবৈধ ভাবে ইঞ্জিন চালিত নৌকাযোগে যাত্রী পারাপার করে বৈধ অনুমদিত যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছেন। বিআইডব্লিউটিএসহ লঞ্চমালিকদের অভিযোগ, যেহেতু নৗযানগুলোর রেজিস্ট্রেশন, সার্ভে সনদ, রুটপারমিট, এমনকি সময়সূচি কিছুই নেই এবং সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। তাই যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম অবৈধ নৌযান চলাচল বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কামরুন নাহার শেফা এবং ফুলছড়ি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দিক নির্দেশনায় মুলক চিঠি পেয়েছি। অবিলম্ব বিআইডব্লিউটিএ নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।