দেশ ত্রিভুজ নীতিতে চলছে উল্লেখ করে বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, ‘রাজনীতিক, আমলা আর ব্যবসায়ী দেশে এই তিন নীতি চলছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যবসার নামে আমলাদের সহযোগিতায় লুণ্ঠনের রাজত্ব কায়েম হয়েছে দেশে।’ গতকাল শুক্রবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আবদুস সালাম মিলনায়তনে বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি)আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, দুর্নীতির কারণে আপনি যদি কোনও ভালো উদ্যোগ নিতে চান তাহলে তা সফল হচ্ছে না। আমরা অনেক দিন ধরে দাবি করছিলাম রেশন কার্ডের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য দেন। তবে এখন শুনছি দুর্নীতির কারণে দলীয় লোক; যাদের টাকা-পয়সা আছে তাদের লিস্ট করে টিসিবির কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যাদের পাওয়া দরকার তারা পাচ্ছে না। দেশের জনগণ এগুলো থেকে মুক্তি চায়।
বিদ্যুতের জন্য সেচের জন্য পানি না দিতে পারলে খাদ্য সংকট হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামনের দিনে সেচের জন্য কী হবে আমার তা জানা নেই। বিদ্যুতের অভাবে সেচের জন্য পানি না দিতে পারলে খাদ্য উৎপাদন কম হবে। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সেচের অভাবে প্রায় ৪০ মিলিয়ন মেট্রিক টন খাদ্য কম উৎপাদনের আশঙ্কা দেখা দিবে।
তিনি বলেন, ‘টাকার জন্য সরকার বলছে এক থেকে দুই ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ দিবে না। তবে আমাদের নির্বাচনি এলাকা থেকে জানতে পারছি সেখানে ৮-১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না।
জিএম কাদের বলেন, সরকার মানুষের পেটে তিনবার লাথি মেরেছে। একবার হচ্ছে রিজার্ভ সংকটের ফলে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করে, দ্বিতীয় ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বেশি মূল্যে আমদানি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিয়ে এবং তেলের দাম বাড়ার কারণে এক-একটি দ্রব্যের দাম তিন-চার বার করে বেড়েছে। এভাবে তিনবার মানুষের পেটে লাথি মারা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি এই দুইটি সেক্টর দুর্নীতির আখড়া মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, সমস্ত সেক্টরে দুর্নীতি হচ্ছে ব্যাপক হারে। তবে এই দুই সেক্টর গোপন দেখে সাধারণ মানুষ জানে না; যে এত বড় দুর্নীতির আখড়া এখানে।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু অয়েল সেক্টরে চাকরি করেছিলাম। অয়েল সেক্টরে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা আছে আমার। অনেক পরিচিত লোক থাকায় আমি দুর্নীতির অনেক খবর পাই। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার আচার্য প্রমুখ।