পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবয় রুপ নিচ্ছে। ভয়াবহ এই বন্যায় ইতোমধ্যেই এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এমন সময়ে রাজনৈতিক সমাবেশ চালিয়ে যাওয়ায় সমালোচনার সম্মুখীন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান। বন্যা পরিস্থিতিতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্তকে ন্যায্যতা দিয়ে ইমরান খান বলেন, তিনি ‘হাকিকি আজাদি’(প্রকৃত স্বাধীনতা)-এর জন্য লড়াই করছেন, যা বন্যা, তাপপ্রবাহের এমনকি যুদ্ধ বাধলেও অব্যাহত থাকবে।
গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ডন। শনিবার পাঞ্জাবের ঝিলামে একটি জনসমাবেশে ভাষণ দেওয়ার সময়, ইমরান খান তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিন্দা করে এই মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন সরকার দলীয় কিছু সংবাদপত্র, সাংবাদিক এবং একটি বিশেষ মিডিয়া হাউসের মাধ্যমে একটি ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে যা সর্বদা চোরদের রক্ষা করে। তারা বলছে এটা সমাবেশ করার সময় নয়। এটি ‘পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত প্রচারণা’। দেশ জুড়ে দুর্যোগের এই সময়ে রাজনীতিতে মগ্ন থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ইমরান বরং রাজনীতির পরিবর্তে এটিকে ‘হাকিকি আজাদীর লড়াই’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি এই চোরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি যারা গত ৩০ বছর ধরে দেশ লুট করেছে। আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছি। আমি এমন একটা দেশের জন্য লড়ছি যেটা একটা ইসলামিক কল্যাণ রাষ্ট্র হওয়ার কথা ছিল। সমাবেশে ইমরান খান তার বিরোধীদের উল্লেখ করে বলেন, আমি আমার জনগণকে সাহায্য করতে থাকব, কিন্তু আমি আপনাকে রেহাই দেব না। সরকারকে কটাক্ষ করে ইমরান খান আরও বলেন যে বন্যার সময় তাকে সমাবেশ না করার জন্য বলা হচ্ছে, কিন্তু সরকার দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে দেয়ালে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মামলা হয়েছে। এমনকি তারা আমাকে গ্রেফতার করতে এসেছে। সারা বিশ্বে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। তারা পাকিস্তানকে ব্যানানা রিপাবলিক বলে। আমাদের উপহাস করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমি শুধু বলেছি যে শাহবাজ গিলকে যারা নির্যাতন করেছে তাদের আইন অনুযায়ী বিচার হওয়া উচিত। এই কথা বলার কারণে তিনি সন্ত্রাসী কাজ করেছেন কি না সেটিও সমাবেশে জানতে চান ইমরান। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে ইসলামাবাদে পিটিআইকে হুমকি দেওয়ার জন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে এই ধরনের প্রচেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমান হবে। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সরকারেরও সমালোচনা করেন ইমরান খান। বর্তমান সরকারের উদ্দেশে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যখন ক্ষমতা ছেড়েছিলেন তখন মূল্যস্ফীতি ছিল ১৬ শতাংশ, এখন তা ৪৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। অথচ বর্তমানে সরকারের অর্থমন্ত্রী বলছেন, পিটিআই নাকি অর্থনীতিকে লাইনচ্যুত করতে চায়।