বৃটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজ ট্রাস নির্বাচিত হওয়ার পরই পদত্যাগ করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল। সোমবার লিজ ট্রাসের জয়ের খবরের পরই পদত্যাগ করেন তিনি। মঙ্গলবার রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করবেন লিজ ট্রাস। এরপরই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন সরকারের প্রধান হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এরপর নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করবেন ট্রাস।
আনাদলু জানিয়েছে, লিজ ট্রাস নতুন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে বেছে নেবেন বলে শোনা যাচ্ছে। পদত্যাগপত্রে প্যাটেল বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, গত তিন বছর ধরে এই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আমার জীবনের বড় সম্মান। এই সময়ে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছি এবং পুলিশে সংস্কার এনেছি। দেশের পরিশ্রমী আইনমান্যকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং অভিবাসন আইন সংস্কার করেছি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়েছি।
প্যাটেলের দায়িত্ব পালনকালে প্রায়ই অবৈধ অভিবাসীরা ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বৃটেনে প্রবেশ করেছে। এসব ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত সময় কেটেছে তার।
এ নিয়ে তিনি পদত্যাগপত্রে বলেন, অবৈধ অভিবাসন নিয়ে এই সরকারের সময় গ্রহণ করা নীতিগুলো টিকিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানি, এই সমস্যার কোনো নির্দিষ্ট সমাধান নেই। তাই সরকারকে অবশ্যই বৃটেনে অভিবাসীদের প্রবেশ ঠেকাতে সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। লিজ ট্রাসের উদ্দেশ্যে প্যাটেল বলেন, আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের নতুন নেতা হিসেবে আমি তাকে সব ধরণের সহযোগিতা করে যাব।
২০১৯ সালে নিজের ক্যাবিনেটে প্রীতি প্যাটেলকে জায়গা দিয়েছিলেন বরিস জনসন। ৫০ বছরের এই ভারতীয় বংশোদ্ভূত এসেক্স প্রদেশের উইথহামের সাংসদ ছিলেন। প্রীতি প্যাটেলই বরিস ক্যাবিনেটের এমন একজন সদস্য ছিলেন, যিনি ঋষি সুনাক কিংবা লিজ ট্রাসের লড়াইয়ে কোনও পক্ষকেই সমর্থন করেননি। নিজের পদত্যাপত্রে তিনি লিখেছেন, ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত একান্তই আমার। লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়া পর্যন্ত এবং নয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়া পর্যন্ত আমি আমার দায়িত্ব পালন করব।
প্রীতি প্যাটেলের জায়গায় বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হতে পারেন সুয়েলা ব্রেভারম্যান। তিনিও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ৪২ বছরের এই রাজনীতিকের জন্ম ভারতের গোয়ায়। বর্তমানে তিনি বৃটেনের অ্যাটর্নি জেনারেল পদে রয়েছেন। তিনিও এ বছর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে ছিলেন। তবে অনেক আগেই লিজ ট্রাস বনাম ঋষি সুনাকের লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে লিজ ট্রাসের কাছে পরাজিত হয়ে তিনি লড়াই থেকে বেরিয়ে যান।
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী হলে ব্রেভারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য লিজ সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত। এই কাজটা তার আলাদা করে শেখার কোনও প্রয়োজন নেই। কাজটা কঠিন, শক্তহাতে দেশ চালাতে হবে। গত ছয় বছর ধরে এই দল টালামাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একটা স্থিতাবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।