দক্ষিণ কোরিয়ায় টাইফুন হিন্নামোরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হয়েছে। বুধবার কর্তৃপক্ষ এ খবর জানিয়েছে। দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানা টাইফুনের কারনে চলতি সপ্তাহে বড়ো বড়ো ঢেউ ও প্রবল বৃষ্টি দেখা দেয়। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম শক্তিশালী ঝড়। সোমবার ও মঙ্গলবার বয়ে যাওয়া এ ঝড়ের কারনে সৃষ্ট বন্যায় রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর ডুবে গেছে। সেন্ট্রাল ডিজাস্টার এন্ড সেফটি কাউন্টারমেজার্স হেডকোয়াটার্স থেকে বলা হয়েছে, ঝড়ে অন্যতম বিধ্বস্ত বন্দরনগরী পোহাংয়ে সাতটি লাশ ও জীবিত দুজনকে উদ্ধার করা হয়। গতকাল বুধবারও উদ্ধার অভিযান চলছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, দুজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। টাইফুনের কারণে চার হাজার সাতশ’রও বেশি লোক বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এতে প্রায় ১২ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৯০ হাজার বাড়িঘর বিদ্যুবিহীন হয়ে পড়েছে।
টাইফুন আঘাত হানার আগে দেশটির কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে ছয়শ’রও বেশি স্কুল বন্ধ এবং স্থানীয় এয়ারলাইন্সের ২৫০টি ফ্লাইট বাতিল করেছে।
কার পার্কিংয়ে পানিতে আটকা পড়ে নিহত ৭: দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘূর্ণিঝড় হিন্নামনোর তা-ব চালিয়েছে। জানা গেছে, জলোচ্ছ্বাসে একটি আবাসিক ভবনের নিচে কার পার্কের ভেতর আটকা পড়ে সাতজন মারা গেছেন। খবর বিবিসির।
জলোচ্ছ্বাস থেকে গাড়িগুলো রক্ষায় আন্ডারগ্রাউন্ড কার পার্কে ছুটেছিলেন বেশ কজন, কিন্তু প্রবল তোড়ে বন্যার পানি সেখানে ঢুকে পড়লে আটকা পড়ে যান তারা।
উদ্ধারকারীরা বলছেন, প্লাবিত ঐ কারপার্ক থেকে তারা মাত্র দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন। এই দুইজন পার্কিং লটের ছাদের সঙ্গে পাইপ ধরে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঝুলে ছিলেন।
এই সপ্তাহের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় হিন্নামনর দক্ষিণ কোরিয়ায় আঘাত হানে। এই বছর এখন পর্যন্ত আঘাত হানা ঝড়গুলোর মধ্যে এটিকেই সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে ভবনের মালিকপক্ষ থেকে বলা হয় তারা যেন আন্ডারগ্রাউন্ডের কার পার্ক থেকে তাদের গাড়িগুলো সরিয়ে নেন। কিন্তু গাড়ি রক্ষা করতে গিয়ে এই ট্রাজেডির শিকার হন সাতজন।
যে দুজন প্রাণে বেঁচেছেন তাদের একজন পুরুষ, অন্যজন নারী। এই দুইজনের অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এই ঘটনাকে বিপর্যয় বলে আখ্যায?িত করেছেন। তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনার কথা জানার পর আমি রাতে ঘুমাতে পারিনি।
পোহ্যাং নামে যে শহরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটিকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার সেখানে প্রেসিডেন্টের সফর করার কথা।
ঐ শহরে সাগর পাড়ের একটি হোটেল ধসে পড়েছে। হোটেলের কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিবিসিকে জানিয়েছে কোন অতিথির কিছু হয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙ্গে গেছে, গাছ ভেঙ্গে পড়েছে এবং অনেক ভবনের কাঁচের জানালা গুড়ো হয়ে গেছে।
পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মত দক্ষিণ কোরিয়ায় গত কয়েক মাস ধরে যেমন তুমুল বৃষ্টিপাত হচ্ছে তেমনি রেকর্ড গরম পড়েছে।