পুলিশের গুলিতে নিহত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড শেষে পুলিশের চার সদস্যসহ সাতজনকে কক্সবাজারের আদালতে হাজির করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে র্যাব-১৫ এর কার্যালয় থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। নতুন করে তাদের বিরুদ্ধে আর রিমান্ডের আবেদন করা হবে না বলে র্যাবের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। ফলে তাদের আদালতের মাধ্যমে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ১২ আগস্ট হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ সাত আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে আবার কারাগারে নেয়া আসামিরা হলেন- সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর হওয়ার দুদিন পর ১৪ আগস্ট আসামিদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে নিজেদের হেফাজতে নেয় র্যাব। কারাগার থেকে প্রথমে তাদের কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় র্যাব কার্যালয়ে।
রিমান্ডে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে র্যাব-১৫ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের পর সকালেই রিমান্ড শেষ হওয়া আসামিদের আদালতে হাজির ও পরে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
৫ আগস্ট এ ঘটনায় মামলা করেন নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। ওই মামলায় এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য ও টেকনাফ পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বিভিন্ন সময় প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কক্সবাজারের আদালত।
সাত আসামির রিমান্ড শেষ হয়েছে। বাকি ছয় আসামি বর্তমানে র্যাবের রিমান্ডে। এরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত এবং কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএন-১৪ এর সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আবদুল্লাহ।
এদিকে সিনহার বোনের মামলায় ৯ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক রয়েছেন। তবে তাদের নামে কোনো পুলিশ সদস্য কক্সবাজারে কর্মরত নেই বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। কিন্তু এ দুই আসামির পরিচয় শনাক্তে জেলা পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছে র্যাব। এমনটিই জানিয়েছে আশিক বিল্লাহ।
এমআইপি/প্রিন্স