সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১০০ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার। এই ধারা অব্যাহত থাকলে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত আগস্টকে ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য গেছে। জানা গেছে, আলোচ্য সময়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৪ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৮৪ কোটি ৮৩ লাখ মার্কিন ডলার। বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলার। এছাড়া, বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানা ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে রেমিট্যান্সে গতি ফিরেছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে- এখন রেমিট্যান্স পাঠাতে কোনো ধরনের কাগজপত্র লাগছে না, রেমিট্যান্সের ওপর রয়েছে
সরকারের দেওয়া ২.৫০ শতাংশ হারে প্রণোদনা, অপরদিকে রেমিট্যান্স কিনতে ব্যাংক গুলো সবোর্চ্চ ১০৮ টাকা দিচ্ছে। এসব কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহ পাচ্ছেন প্রবাসীরা। ফলে রেমিট্যান্সে গতি ফিরেছে। এই রেমিট্যান্স প্রবাহ ডলার সরবরাহ বাড়াতে সহায়তা করবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা আরও বলছেন, রেমিট্যান্সের এই প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ডলারের সরবরাহ বাড়বে, সংকট অনেকটা কেটে যাবে। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আর এই রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি অব্যাহত রাখতে বিদেশে দক্ষ লোকবল পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। যা গত ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল। যদিও এক মাসের ব্যবধানে আগস্টে ৫.৯১ কোটি ডলার কম অর্থাৎ ২০৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে তবে তা আগের দুই বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি। ২০২১ সালের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮১ কোটি ডলার। ২০২০ সালে জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসলেও আগস্টে এসেছিল ১৯৬ কোটি মার্কিন ডলার। তাতে ২০২০ এবং ২০২১ সালের আগস্টের তুলানায় এবার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।
বিদায়ী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ওই অর্থবছরের প্রথম মাস থেকে আগের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ধীরগতির। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি ১ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ, মার্চে ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ, এ্রপ্রিলে ২০১ কোটি ৮ লাখ, মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ এবং গত জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮৪ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।