‘সরকারের অন্যায় আদেশ মানতে গিয়ে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা পড়েছে। সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। সবার আগে তাদের ওপরেই নিষেধাজ্ঞা আসা প্রয়োজন। নিষেধাজ্ঞা এরই মধ্যে জনগণ দিয়ে দিয়েছে। মানুষ বলে দিয়েছে তোমাদের আর দরকার নেই।’ গতকাল শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
গতকাল তিনি বলেন, দেশের শতকরা ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে। আওয়ামী লীগের নেতারা কোটি কোটি টাকার মালিক। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। তরুণদের জেগে উঠতে হবে, দেশের মানুষকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আজকে সাওন আব্দুর রহিম নূরে আলমের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। তাদের রক্তের প্রতি সত্যিকার অর্থে শ্রদ্ধা জানাতে চাই ভালোবাসা জানাতে চাই। তাহলে এই ভয়াবহ সরকারকে প্রতিহত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র হরণকারীরা যখন গণতন্ত্রের কথা বলে, তখন লজ্জা ধিক্কার ছাড়া কিছুই আশা করা যায় না। আজ যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনা বড় বড় কথা বলছেন যে যুদ্ধ চাই না, নিষেধাজ্ঞা চাই না। কেউ চায় না যুদ্ধ, কেউ চায় না নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তার মুখে এটা মানায় না। তিনি নিজে এদেশে হত্যার সঙ্গে জড়িত।
‘গুম হয়ে গেছে আমাদের ছয় শতাধিক মানুষ। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম থেকে শুরু করে আমাদের ছাত্রদলের অসংখ্য ছেলে। এসব ছেলে চলে গেছে মায়ের কোল খালি করে। মা জানে না, বাবা জানে না, কোথায় তারা। আজ শত শত মানুষকে থানায় নিয়ে তারা পঙ্গু করে দিয়েছে। সহস্রাধিক মানুষকে তারা হত্যা করেছে।’
ফখরুল বলেন, তারা আগে উন্নয়নের কথা খুব বেশি বলতো এখন একটু কম বলে। উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না যদি সেখানে গণতন্ত্র না থাকে। গণতন্ত্র কখনোই ফলপ্রসূ হবে না, যদি সেখানে পাল্টাপাল্টি সিস্টেম না থাকে এবং মানুষ ভোট দিতে না পারে।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি ছাড়া কোনো ব্যক্তি নেই বাংলাদেশে। তখনো তাই শুরু করেছিল কিন্তু পারেনি। এরপর এখন আবার শুরু করেছে। এক ব্যক্তির শাসন, এক ব্যক্তির মতবাদ, এক ব্যক্তির সব। কিন্তু এগুলো টেকে না।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মূল লক্ষ্য সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ বির্নিমাণে, বিভিন্ন কর্মকা-ে, উন্নয়নে কর্মকা-ে, উল্লেখযোগ্য যে ভূমিকা রয়েছে তার ইতিহাস তুলে ধরা। বিশেষ করে গত ১৪ বছরে যারা সরকারে তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। বাংলাদেশের ৫০ বছরে ইতিহাসকে বিকৃত করে শুধু তাদের স্বার্থে নতুন করে ইতিহাস রচনা করার অপচেষ্টা করছে। তিনি বলেন, আমরা জানি ইতিহাস রচনা করেন ঐতিহাসিক এবং ইতিহাসবিদরা। এছাড়া কেউ ইতিহাস সৃষ্টি করতে পারেন না। তারা হয়তো সাময়িক রচনা লিখতে পারেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ৫০ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাস আমরা প্রত্যেকের হাতে তুলে দেব। এর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়দের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন রচনা প্রতিযোগিতা কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের স ালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল সাবেক উপ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।