জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিড বিপর্যয়ে নাশকতা আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) জাতীয় গ্রিডের সঞ্চালন লাইন বিভ্রাটের পর ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। ওইদিন দুপুর ২টার দিকে এ বিপর্যয় ঘটে। এরপর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট অঞ্চল বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে দুটো জিনিস। একটা হলো এখনো পলিটিক্যালপারসনদের কাছে যেটা শুনছি, এরকম ঘটনা আরও হবে। এটা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বললেন। আরও হবে মানে কিন্তু এখানে অন্যরকম ষড়যন্ত্রের কথা। উনি জানেন কীভাবে? জানেন কীভাবে ভবিষ্যতে আরও হবে, এত বছর হলো না। যে ব্যক্তিটা তার নিজের আমলে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারেনি ট্রান্সমিশনের লাইন তো বাদই দিলাম। একমাত্র খাম্বা এবং পুল ছাড়া কিছুই লাগাতে পারেনি। উনি কিন্তু পন্ডিতের মতো কথা বলে দিলেন, এরকম ঘটনা আরও হবে।’ তিনি বলেন, ‘এখানে অন্যরকম নাশকতা আছে কি না, সেটাও যাচাই-বাছাই চলছে। এটা হচ্ছে একটা বিষয়। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে অবশ্যই টেকনিক্যাল সাইটটাও আমরা দেখছি।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০১৪ সালের ঘটনাটি ছিল এক রকম। এ ঘটনাটি অন্যরকম। দুটি দুই রকম ঘটনা। ওইখান থেকে যা নেওয়ার তার থেকে অনেক দূর পিজিসিবি (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড) অ্যাডভান্স লেভেলে চলে গেছে। পাওয়ার রিস্টোর করতে মানে কত দ্রুত আনতে পারি, বিভিন্ন উন্নত বিশ্বে কয়েক দিন আগে রেকর্ড আছে, তিন দিন-চার দিন লেগে গেছে কিন্তু আমরা সেদিকে যাচ্ছি না।’
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করার কারণে কিন্তু আমরা দ্রুততার সঙ্গে আনতে পেরেছি। এক ঘণ্টা পর থেকেই কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছিল রি-স্টোর করা। এটা একটি বড় জিনিস অবশ্যই টেকনিক্যাল ফল্ট এখানে আছে। একদম পিন টু পিন যদি আমি আমরা ধরতে যাই, তাহলে একটু সময় লাগবে। এ কারণে আমি দুইটি কমিটি করে দিয়েছি। একটি কমিটি হলো বিদ্যুৎ বিভাগের ভেতরের লোক আরেকটি বাইরের লোক।’ তদন্ত কমিটির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কবে পাবেনÍ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পাওয়া যাবে।’ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের এ ঘটনা রোধ করার জন্য আপনারা কি করবেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে আমরা ঘণ্টাখানেক পর থেকে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ রিস্টোর করা শুরু করি। এটা ম্যানুয়ালি করা হয়েছে। এটার বড় জিনিস হচ্ছে আমাদের এখন অটোমেশনে যেতে হবে এবং আমরা কাজ শুরু করেছি। হয়তো আগেই করতে পারতাম। কিন্তু কোভিডের কারণে দুটি বছর পিছিয়ে গেছি। মানে এটা শেষ হতে হয়তো আরও দুই বছর লাগবে। গ্রিডকে স্মার্ট গ্রিডে পরিণত করা, এটা একটি বড় বিষয় এ মুহূর্তে।’