শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বিশ্বমানের টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে : রাষ্ট্রপতি রাসূল (সা.)-এর সীরাত থেকে শিক্ষা নিয়ে দৃঢ় শপথবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে—ড. রেজাউল করিম চৌদ্দগ্রামে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫, আহত ১৫ চাহিদার চেয়ে ২৩ লাখ কোরবানির পশু বেশি আছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী রাজনীতিবিদেরা অর্থনীতিবিদদের হুকুমের আজ্ঞাবহ হিসেবে দেখতে চান: ফরাসউদ্দিন নতজানু বলেই জনগণের স্বার্থে যে স্ট্যান্ড নেয়া দরকার সেটিতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার মালয়েশিয়ার হুমকি : হামাস নেতাদের সাথে আনোয়ারের ছবি ফেরাল ফেসবুক হামাসের অভিযানে ১২ ইসরাইলি সেনা নিহত আটকে গেলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থ ছাড় গাজানীতির প্রতিবাদে বাইডেন প্রশাসনের ইহুদি কর্মকর্তার লিলির পদত্যাগ

৩১ জেলায় আমনের ক্ষতি, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২২

২৪ অক্টোবর দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের মোট ৩১টি জেলার আমন ধানের আবাদি জমি নানা মাত্রায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এসব জেলায় আমন আবাদে ব্যবহূত মোট ৮০ হাজার ৭৭৭ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। এর বাইরেও বিপুল পরিমাণ আবাদি জমির ধানে চিটা পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সব মিলিয়ে এবার আমন মৌসুমে চালের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন পাওয়া নিয়ে বড় ধরনের আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষি খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, অনাবৃষ্টির কারণে এবার নির্ধারিত সময়ে আমন আবাদ শুরু করা যায়নি। কিছু জেলায় সবে ধান পাকতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই আঘাত হেনেছে সিত্রাং। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও ভারি বৃষ্টিপাতে অনেক জমির ধান হেলে পড়েছে। কিছু অ ল প্লাবিত হয়েছে জলোচ্ছ্বাসে। ধানি জমিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যেসব জমি এরই মধ্যে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, তার বাইরেও অনেক ফসল দুর্যোগের প্রভাবে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বের সরবরাহ ব্যবস্থায় তৈরি হয়েছে বড় সংকট। আগামী বছর বিভিন্ন দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে দেশেও খাদ্য সংকট দেখা দেয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আসন্ন এ সংকট মোকাবেলায় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিতের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যেই সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমন উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আসন্ন সংকটে বিপদের মাত্রা আরো বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
যদিও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সিত্রাংয়ের আঘাতে কিছু জমি আক্রান্ত হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সার্বিক উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে না জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম নেতা-কর্মী বলেন, রাজশাহী, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ কিছু জেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে আমন উৎপাদনে এ ক্ষতি তেমন প্রভাব ফেলবে না বলে আশা করছি। এছাড়া যেসব এলাকা প্লাবিত হয়েছে, ঝড়ের আগেই সেখানে পানি উঠে গিয়েছে। ফলে যত ঝড়ই হোক, ধান গাছ হেলে পড়েনি। এখন পানি নেমে যাচ্ছে। সাধারণত ক্ষতি বেশি হয় বাতাসে। তবে সেটা হয়নি। আবার উপকূলীয় এলাকাগুলোয় এবার দেরিতে ধান আবাদ করায় এখনো গাছগুলো ছোট। কিছু এলাকায় ধান হেলে পড়েছে। এর তথ্য আমরা নিচ্ছি। এতে সামান্য কিছু ক্ষতি হতে পারে। তবে সার্বিক উৎপাদনে এর প্রভাব পড়বে না। উল্টো ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হওয়া বৃষ্টির কারণে তুলনামূলক ফলন ভালো পাওয়া যাবে।
দক্ষিণা লের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং বয়ে গেলেও এর প্রভাব পড়েছে সারা দেশেই। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে ৩১ জেলার জমি আক্রান্ত হওয়ার কথা বলা হলেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবজনিত দুর্যোগে মোটামুটি দেশের সব জেলায়ই কম-বেশি আমন আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন। দিনাজপুর জেলার হিলির ইসমাইলপুরের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ঝড়ের কারণে আমার জমির সব ধান গাছ হেলে মাটিতে শুয়ে পড়েছে। শুধু আমারই নয়, এলাকার অনেকের জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে যেসব জমি বা ধানের গোড়ায় পানি, সেসব জমির ধান বেশি হেলে পড়েছে। এখন এসব ধান গরুকে খাওয়ানো ছাড়া কোনো কাজেই আসবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (দিনাজপুর কৃষি অ ল) প্রদীপ কুমার গুহ বলেন, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও প গড়—এ তিন জেলায় কোনো আমনের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এদিকে ঘূর্ণিঝড় আসেনি। এ অ লে কোনো প্রভাব পড়েনি। ৪ লাখ ৯৮ হাজার হেক্টরের মধ্যে ৫-১০ হেক্টর জমি বিভিন্ন কারণেই নষ্ট হতে পারে। চলতি পঞ্জিকা বর্ষে মোট ৫৬ লাখ ২০ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে এবার সময়মতো মৌসুমের আবাদ শুরু করা যায়নি। এতে আবাদ লক্ষ্য পূরণ হওয়া নিয়ে সংশয়ে পড়ে গিয়েছিলেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তবে শেষ মুহূর্তে এসে আবাদি জমির পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যায়। এবার মোট ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে আমন মৌসুমের ধান আবাদ করা হয়েছে। এখান থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৬ হাজার টন। কয়েকটি জেলায় এরই মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার ৩৮০ হেক্টরের ফসল কাটা হয়েছে, যা মোট আবাদকৃত জমির ১ শতাংশ।
সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন কৃষি অ লে প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত জমি নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, উপকূলে খুলনা অ লের খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল—এ চার জেলায় এবার মোট ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। এর মধ্যে ২৩ হাজার ৭৭৭ হেক্টর জমি ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে খুলনা জেলার ধানি জমি। জেলাটিতে মোট ৯৩ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির মধ্যে ১৭ হাজার ৯৪২ হেক্টর আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাটে আক্রান্ত হয়েছে ২১৩ হেক্টর জমির আমন ধান। খুলনা অ লের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও খুলনা জেলার উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান নেতা-কর্মী বলেন, খুলনা জেলার ১ হাজার ৭১ জন আমনচাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭৩ লাখ টাকা। সিত্রাংয়ে বাগেরহাট জেলার আমন ও সবজি আবাদকারী কৃষকদের অন্তত ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজিজুর রহমান। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রাম অ লের পাঁচ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে এবার মোট ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৭৪২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। শুধু আমন ধানেই চট্টগ্রাম অ লের কৃষকদের এবার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকায় দাঁড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অ লের ৭ হাজার ২০৮ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নোয়াখালীতে ৮ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজার জেলায় ৭৯৮ হেক্টর, লক্ষ্মীপুরে ১০০ ও ফেনী জেলায় ১১১ হেক্টর জমির আমন ধান আক্রান্ত হয়েছে। ফেনীর সোনাগাজীর চরছান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষক কামাল হোসেন জানান, তিনি চলতি মৌসুমে তিন একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। ধানের গাছগুলোয় এখন থোড় ও ফুল এসেছে। ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসে অন্তত এক একর জমির ধান গাছ নুইয়ে পড়েছে। আক্রান্ত জমির ধান গাছে চিটা বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
কক্সবাজারের উখিয়ায় এবার আমন আবাদ শুরু হয়েছে দেরিতে। এখানকার ফসল এখনো পাকতে শুরু করেনি। এর আগেই আঘাত হেনেছে সিত্রাং। ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়েছে খেতের ধান। ঝড়ে নুইয়ে পড়া এসব ধান থেকে সর্বোচ্চ চার ভাগের এক ভাগে ফলন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। উখিয়ার হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার বিঘা জমির আমন ধান বাতাসে হেলে পড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় বড় দুশ্চিন্তায় আছি। আর কিছুদিন পরেই খেতের ধান পাকত। ঝড়ে সবকিছুই শেষ। ইউনিয়নের শত শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। হেলে পড়া ধানের চার ভাগের এক ভাগ ফলন আসতে পারে। চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মোফাজ্জল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে চট্টগ্রাম অ লের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আমরা প্রতিবেদন আকারে জমা দিয়েছি। এর মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম জেলার প্রতিবেদন সম্পূর্ণ না হওয়ায় সেটি জমা দেয়া যায়নি। এ অ লে আমন ধানের পাশাপাশি শীতকালীন সবজিরও ক্ষতি হয়েছে। এ অ লের নোয়াখালী জেলায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এখন কৃষকদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে বিবেচনা করা হবে।
কুমিল্লা অ লের কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া—এ তিন জেলায় মোট ১ লাখ ৯৭ হাজার ২০৮ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ৮ হাজার ২৯২ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে, যা মোট জমির প্রায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ। এ অ লে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাঁদপুরে। জেলার আমন আবাদি মোট ২৭ হাজার ৯৮৬ হেক্টর জমির মধ্যে ৭ হাজার ৯২৫ হেক্টরই আক্রান্ত হয়েছে। বরিশাল অ লের ছয় জেলা বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলায় আমন আবাদ হয় ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৪ হেক্টর জমিতে। সিত্রাংয়ের প্রভাবসৃষ্ট দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ৯২০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর ও পটুয়াখালীতে ১ হাজার ১৬০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ফজলুল হক নেতা-কর্মী বলেন, আমাদের অ লে এবার দেরিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ে তেমন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কিছু জমি আক্রান্ত হলেও তা খুব সামান্য। তবে এখানে শীতকালীন আগাম সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফরিদপুর অ লেও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুর জেলায় ৭৪ হাজার ২৮২ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৪ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। গোপালগঞ্জের ১৩ হাজার ৪১০ হেক্টর আমন ধানের জমির ৩ হাজার ৩৫২ হেক্টরই আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা অ লের আট জেলায় ৩ হাজার ৮৪০ হেক্টর, যশোর অ লের ছয় জেলায় ৭৫৬ ও সিলেট অ লের চার জেলায় ২০০ হেক্টর ধানের জমি আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে আউশ মৌসুমেও এবার চাল উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে বলে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে আউশ উৎপাদন গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টন কমবে। গত বছর আউশ মৌসুমে ১১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ২৭ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়। এবার নয় লাখ হেক্টর জমিতে ২০ লাখ ৫০ হাজার টন চাল উৎপাদনের প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এছাড়া কমবে মোট উৎপাদনও। গত বছরের চেয়ে এবার চাল উৎপাদন কমবে প্রায় দুই লাখ টন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সোলায়মান আলী ফকীর নেতা-কর্মী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে তো কারো হাত নেই। এখন আমনের ফসল তোলার সময়। ঘূর্ণিঝড়ে যা ক্ষতি হয়েছে তা রিকভারির সুযোগ আসলে কম। এ ক্ষতি মেনে নিতে হবে। তবে যত দ্রুত পারা যায় জলাবদ্ধ অ লগুলোর পানি নিষ্কাশন করতে হবে। এতে ফসল উৎপাদন কিছুটা ধরে রাখা সম্ভব। সেই সঙ্গে পরের মৌসুমগুলোতে উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে এখন থেকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস নেতা-কর্মী বলেন, উপকূলীয় ১৯ জেলাসহ দেশের মোট ৩১ জেলায় আমন ফসল আক্রান্ত হয়েছে। তবে কী পরিমাণ জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে মূলত আক্রান্ত হয়েছে বেশি। সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান নেতা-কর্মী বলেন, সিত্রাংয়ের কারণে আক্রান্ত জমির মধ্যে যে এলাকায় ধানে ফুল এসেছে সেখানে ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকবে। ধানে চিটা হবে। আবার যে এলাকায় ধানে চাল হয়েছে সেখানে ধান হেলে পড়লেও ক্ষতি হবে না। এক্ষেত্রে সাধারণত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে সহায়তা দেয়া হয়। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বোরো আবাদ বাড়াতে হবে। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ দেয়া যেতে পারে। এছাড়া যেহেতু বোরো মৌসুমে সার ও সেচ বেশি প্রয়োজন হয় সে কারণে কৃষকদের প্রণোদনা দিতে হবে। এটাই হবে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ।-বণিকবার্তা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com