বগুড়ায় এসওএস শিশু পল্লীর আয়োজনে কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্সেস টু রিডিউজ ডিজিটাল ডিভাইড প্রোজেক্ট এর যৌথ পর্যবেক্ষণ ও আলোচনা সভা শিকারপুর কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম পিন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনার বিষয়বস্তু হলো শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসের প্লাটফর্ম হিসেবে জুম,গুগলমিট এ্যাপ ব্যবহার করে কী ধরনের উপকৃত হয়েছে। এছাড়াও পড়াশোনার কাজে সহযোগী অন্যান্য এ্যাপ ব্যবহার করার দক্ষতা কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তারা নিয়মিত যে মেইল আদান প্রদান ও অনলাইন ভিত্তিক অন্যান্য কাজ করে থাকে সে বিষয়ে তাদের দক্ষতা কতটুকু নিশ্চিত হয়েছে। শনিবার সকালে শিকারপুর কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে উক্ত প্রকল্পের ফলাফলস্বরুপ হিসেবে প্রকল্পের পনেরো মাস অতিবাহিত হওয়ায় এর অংশ হিসেবে যৌথ পর্যবেক্ষন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হযরত আলী। তিনি বলেন, ডিজিটাল ডিভাইস এর ভাল ও মন্দ দুটো দিকই আছে। আমাদের সবার উচিত ভালো দিকটা গ্রহন করা। তিনি আরোও বলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রকৌশলী, জজ,ব্যারিস্টার হওয়ার আগে আমাদের সবাইকে ভালো মানুষ হতে হবে। শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের প্লাটফর্ম হিসেবে জুম, গুগলমিট এ্যাপ ব্যবহারের উদ্বুদ্ধ করতে এবং সেই সাথে এ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। পরিশেষে এসওএস শিশুপল্লী বগুড়া এর পরিবার শক্তিশালীকরন প্রকল্পের আওতায় সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আরও উত্তরোত্তর ও সাফল্য কামনা করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়া এসওএস শিশুপল্লী এর পরিচালক আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার সাথে সাথে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় অনলাইন ক্লাস। ধনী ও শহরের শিক্ষার্থীরা মহামারি চলাকালীন তাদের স্কুলের ক্লাস ও পড়াশোনা অনলাইন স্মার্ট ফোন বা বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে চালিয়ে যেতে পারলেও গ্রামের পিছিয়ে পড়া দরিদ্র ছেলেমেয়েরা অনলাইন শিক্ষার উপকরণের অভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছিলো। এই প্রভাবে বাংলাদেশের গ্রামীন ও শহুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন আরো প্রকট হয়েছিল। আর এই ডিজিটাল বিভাজন দূর করার লক্ষ্যে এসওএস শিশু পল্লী বাংলাদেশ হাতে নিয়েছিলো কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্সেস টু রিডিউজ ডিজিটাল ডিভাইড প্রোজেক্ট। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এসওএস শিশু পল্লী সিদ্ধান্ত নেয় যে, কোভিড-১৯ এর প্রভাবে সৃষ্ট শিক্ষা সংকট থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পরিত্রানের উদ্দেশ্য ডিজিটাল শিক্ষার উপকরণ হিসেবে এসওএস শিশু পল্লী বগুড়া এর পরিবার শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় সুবিধা বঞ্চিত সাতশত ষাট জন দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরনের উদ্বোধন করে ছিলেন বগুড়া জেলা প্রশাসক মোঃ জিয়াউল হক। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বিভাজন কমানো, গ্রামীন ও শহুরে শিক্ষার ভারসাম্য হীনতা হ্রাস করা, অনলাইন শিক্ষা গ্রহন করার প্রেরণা এবং শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা নিশ্চিত করা। এছাড়াও বিস্তারিত আইসিটি জ্ঞান বিকাশ বিষয়ে আলোচনা যা শিশু এবং যুবকদের মধ্যে উদ্ভাবনী শক্তিকে আরোও সমৃদ্ধ করতে সহায়তা করবে। আরোও উপস্থিত ছিলেন বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক, বগুড়া এসওএস হারম্যান মেইনার কলেজের অধ্যক্ষ শীতল কুমার সরকার, শিশুপল্লী সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান আসাদ, এসওএস শিশুপল্লী ইআরডিডি প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ সাঈদ আব্দুল্লাহ, এসওএস সামাজিক কেন্দ্রের ইনচার্জ ফয়সাল করিমসহ শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এসওএস শিশু পল্লী সামাজিক কেন্দ্রের কর্মচারী কর্মকর্তাবৃন্দ।