জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘কপ-টুয়েন্টি সেভেন’কে ঘিরে সোমবার মিশরের শার্ম আল শেখে জড়ো হওয়া বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে কার্বন নিঃসরণ কমানো ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেয়াসহ রয়েছে আরো কিছু চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কেবলমাত্র চলতি বছরই হাজার হাজার প্রাণহানি এবং কোটি কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে বিশ্ব।
এ প্রেক্ষাপটে গত রোববার উদ্বোধনী সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং কপ-টুয়েন্টি সেভেনের প্রেসিডেন্ট সামেহ শুকরি।তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলো ধনী রাষ্ট্রের কাছে যে ক্ষতিপূরণ দাবি করছে তা এজেন্ডায় রয়েছে। তিনি আরো জানান, জলবায়ু তহবিল গঠনে আনুষ্ঠানিক আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছে ঠিক, কিন্তু এবারের সম্মেলনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার নিশ্চয়তা মিলবে না। তবে উদ্বোধনী অধিবেশনে কপ-টুয়েন্টি সেভেনের কর্মকর্তারা ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকট এবং করোনা মহামারি সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে জতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কর্মকর্তা সিমন স্টিয়েল বলেছেন, ভয় হয় অন্যান্য অগ্রাধিকার না প্রাধান্য পায়। আরো ভয় যে আমরা একেকটি দিন, একেকটি সপ্তাহ, মাস ও বছর হারিয়ে ফেলছি। কারণ আমরা কিছু করতে পারছি না।
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ১৯ শতকের শেষের দিকের স্তরের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ধরে রাখতে কার্বন নিঃসরণ ২০৩০ সাল নাগাদ ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে।
কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, গত এক দশকে কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে ১০ শতাংশ এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ২.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
স্টিয়েল উল্লেখ করেন, গত বছরের গ্লাসগোয় অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে ১৯৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ২৯টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক তাদের সর্বশেষ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।
মিশরে জলবায়ু সম্মেলনের দুদিনের আলোচনায় প্রায় ১১০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান অংশ নিচ্ছেন। তবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের নেতা শি জিন পিং সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না। বিশ্বের দ্বিতীয় কার্বন নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মধ্যবর্তী নির্বাচন শেষে মঙ্গলবার সম্মেলনে যোগ দেবেন। মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকসহ এ সম্মেলন চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে ডাকা তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন থেকে ধনী দেশগুলোর প্রতি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে ।