বাজারে বেড়েছে প্রতিটি জিনিসের দাম। যার রোষানলে পড়ে এখন সীমিত আয়ের মানুষদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্থির আয়ে অতিরিক্ত দামে জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে তাই অনেকেই মাংস ও মাছ ছেড়ে ঝুঁকছেন সবজির দিকে। সম্প্রতি রংপুরের খুচরা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, এখানে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে খুচরা ৪০ টাকা কেজি দরে, বেগুন ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, সিম ৬০ টাকা। এই দাম গত দুই সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে এসব সবজি পাইকারি বাজরে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এদিকে বাজারে মাছ মাংসেরও দাম অপরিবর্তিত আছে। রংপুর সিটি বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়। তবে এই বাজরে মাছের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা দরে এখানে আকারভেদে রুইমাছ ২৫০-৩০০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কার্প ২০০-২২০ টাকা, পাঙাস ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গচি মাছ ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রংপুর নগরীর সিটি বাজারে কথা হয় জামাল উদ্দিন নামে এক ছাপাখানার কর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘১৭ বছর ধরে চাকরি করছি। করোনার পর থেকে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে সে তুলনায় আমাদের আয় বাড়েনি বরং কমেছে। এই কম আয়ের টাকা নিয়ে বাজারে আসলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই সব টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বাজারে মাছ ও মাংসের কথা চিন্তাই করা যায় না। তাই কম কম করে সবজি কিনেই ফিরতে হয় বাড়িতে।’
এই বাজারে শাক কিনতে আসা শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ছয় মাস ধরে এই বাজারে সবজির দাম কমছে না। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫০ টাকার ওপরে। আমার মতো একজন শ্রমজীবী দৈনিক আয়ের টাকা দিয়ে চাল কেনার পর বাজরে এসে মাছ মাংস তো দূরের কথা ভালো সবজির দিকেও তাকাতে পারে না। তাই ১০ টাকা করে দুই প্রকারের শাক নিলাম আর যাওয়ার পথে এক কেজি আলু নেবো। শাক ভর্তা ছাড়া এখন আমাদের আর উপায় নেই।’ সিটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, জামাল, রফিকুল ছাড়াও অনেক মধ্যবিত্তরাও শীতকালীন শাক সবজি কিনে বাসায় ফিরছেন। বাজারে এসব শাক সবজির দামের কথা জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, এই ভরা মৌসুমেও সবজির দাম কমেনি। বরং গতবারের তুলনায় এবারের দাম অনেক বেশি। আর তাই সবজি হোক বা মাছ সব কিছুই এখন প্রয়োজনের চেয়ে কম কিনছেন তারা। সিটি বাজারের সবজি বিক্রেতা আফজল হোসেন বলেন, ‘বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলেও দাম এখনও কমেনি। মানুষের আয় কম থাকায় আগের তুলনায় বেচা বিক্রি নেই। মানুষ এখন সবজি কিনছে পরিমাণে অনেক কম করে।’