পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠন একটি প্রাইভেট অর্গানাইজেশন। এ সংগঠনে বিএনপি জাসদ বাসদ জাতীয় পাটি ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। তারা সকলে মিলে পরিবহন সমিতি বা মালিক-শ্রমিক সমিতি গড়ে তুলেছেন। নানাবিধ কারণে তারা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা হচ্ছে তাদের নিজস্ব বিষয়। এর সঙ্গে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রামের জনসভার স্থান ও প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবেম মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মালিক শ্রমিকদের ধর্মঘটের অন্যতম কারণ হচ্ছে বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে তখন মালিক শ্রমিক আতংকে থাকে। অতীতে ২০১৩-১৪ সালে তারা বাস ট্রাক পুড়িয়েছে। সমাবেশের সময় বাস ট্রাকের ওপর হামলা করেছে। জনগণের সম্পত্তির ওপর হামলা করে তা ধ্বংস করেছে। সে আতংক থেকে মালিক শ্রমিক ইউনিয়ন ধর্মঘট ডাকতে পারে। এতে সরকার বা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কোনো হাত নেই।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কিছুদিন পূর্বে একই স্থানে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। সে সমাবেশে তেমন লোক হয় নাই। মাঠের দুই তৃতীয়াংশ খালি ছিল। চট্টগ্রামের জব্বারের বলি খেলায়ও এর চেয়ে বেশি মানুষ হয়। তিনি বলেন, আগামী ৪ ডিসেম্বরের সমাবেশে প্রকৃতপক্ষে লাখ লাখ লোকের সমাগম হবে। পলোগ্রাউন্ড মাঠ ছাপিয়ে তা বহুদুর বিস্তৃত হবে। মন্ত্রী এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দিনসহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলার নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন। পরে মন্ত্রী নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন। কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, আবাদী জমির পরিমাণ ক্রমাগত কমতে থাকলেও সরকারের কৃষিবান্ধব কর্মসূচির কারণে দেশে প্রয়োজন মতো খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে।
কৃষিপণ্য উৎপাদনের বিভিন্ন বৈশ্বিক সূচক তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির সময় কোনো দলের লোকজনকে মাঠে দেখা না গেলেও কৃষক লীগ প্রান্তিক কৃষকদের পাশে ছিল। তাদের ধান কেটে মাথায় বা ঘাড়ে করে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। তিনি বলেন, সরকারে বা বিরোধী দলে না থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষক লীগের মাধ্যমে ১৯৮৩ সাল থেকে দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এখন তা বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের নিকট পৌঁছে দিতে তিনি কৃষক লীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগ সভাপতি নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমানসহ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।