আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বলেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে খেলা হবে। খেলা হবে বিএনপির সাথে, আন্দোলনে খেলা হবে। ভোট চোর, জলিয়াতি, দুঃশাসন, দুর্নীতিবাজ, জঙ্গিবাদ, হাওয়া ভবন বানিয়ে যারা টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। আর তারা (বিএনপি) নাকি আমাদের বিরুদ্ধে খেলতে চায়। লক্ষ্মীপুরবাসী প্রস্তুত থাকুন, ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে অপশক্তি মাঠে নেমেছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাই সজাগ থাকুন। মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী। জেলা স্টেডিয়াম মাঠে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি আরো বলেন, তত্ত্বাবধকায়ক ইস্যু এখন মৃত। মৃত ইস্যু নিয়ে কোন লাভ নেই। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের বাইরে কোন কথা বলে লাভ হবেনা। বরং এই মৃত ইস্যু নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে বলে হুশিয়ারী দেন তিনি। সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, বিএনপি সরকারের আমলে জঙ্গিবাদের সূত্রপাত। তারাই শায়খ আবদুর রহমান, বাংলাভাইকে সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, হাওয়া ভবন থেকে জঙ্গিদের ইন্ধন দেওয়া হতো। তারাই জঙ্গিদের সৃষ্টি করেছে। আর আমরা (আওয়ামী লীগ) জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। আদালতে কারা জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিয়েছে, সেটার তদন্ত চলছে। অপেক্ষা করুন তদন্তে বের হয়ে আসবে। মির্জা ফখরুল মিথ্যাচার করছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুলের মুখে এতো মধু, কিন্তু অন্তরে বিষ। তাই আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু হয়েছে, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল হয়েছে। এগুলো ফখরুলদের সহ্য হয়না। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। বলে- ‘প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছ দেশে দুর্ভিক্ষ হবে’। প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলেনি। বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে উনি বিশ্ব নেতাদের এখনই সর্তক হতে বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ হবে- এমনটা প্রধানমন্ত্রী বলেননি। আমাদের ৩৬ হাজার বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে। ৬ মাসের ব্যবস্থা আছে। একটা দেশ চলার জন্য তিন মাসের রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের চিন্তায় প্রধানমন্ত্রীর ঘুম নেই। তার কাছেই এ দেশ নিরাপদ, দেশের জনগণ নিরাপদ। তাই শেখ হাসিনা সরকারকে আরেকবার দরকার। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী মায়া। এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন। পরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম সভাপতি গোলাম ফারুক পিংক ও সাধারন সম্পাদক এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নকে সাধারন সম্পাদক করে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষনা দেন। গোলাম ফারুক পিংকু ও এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এর আগেও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ হেলিকপ্টার যোগে পুলিশ লাইন্স মাঠে অবতরন করেন। পরে সম্মেলন শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন নেতারা। সম্মেলন শুরুর আগে নেতাকর্মীরা খন্ডখন্ড মিছিল নিয়ে সকাল সাতটা থেকে জেলা স্টেডিয়াম মাঠে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষনের মধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীর সমাগমের মধ্যে দিয়ে কানায় কানায় ভরে যায় জেলা স্টেডিয়াম মাঠঅ। সবার হাতে ছিলে বিভিন্ন ধরনের প্লেকার্ড। দিনভর উজ্জীবিত ছিল নেতাকর্মীরা।