ভোর থেকেই হাটহাজারী-নাজিরহাট সড়কে মানুষের ঢল নামে। সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চারিয়া গ্রামের ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা পরিণত হয় মোনাজাতে অংশ নিতে আসা ধর্মপ্রাণ অর্ধলক্ষ মুসল্লিদের জনসমুদ্রে। ফজরের নামাজের পর মাওঃআবদুর রহমান(ভারত) বয়ান করেন।সকাল ৮টায় শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। প্রায় মিনিটের মোনাজাতে লাখো মুসল্লির আমিন আমিন ধ্বনির মধ্য দিয়ে মুখরিত হয় ইজতেমা ময়দান। এরই মাধ্যমে শেষ হয় চট্টগ্রাম বিভাগের ১১জেলাকে নিয়ে ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। সোমবার (২৮ নভেম্বর) ভোর থেকে ইজতেমা মাঠ ও আশপাশের এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। প্রায় ২০ মিনিট ব্যাপী আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমাস্থলে অর্ধলক্ষ মুসল্লির ঢল নামে। শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে এসে সমবেত হতে থাকে। এ সময় ইজতেমা মাঠ ও আশপাশ এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। যত দূর চোখ যায়, শুধু মানুষ আর মানুষ দেখা যায়। সকাল নাগাদ ইজতেমার মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মুসল্লিরা মাঠের আশপাশের রাস্তা ও অলিগলিতে অবস্থান নেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, ইজতেমাস্থলের শামিয়ানায় পৌঁছাতে না পারা অনেক মুসল্লি মহাসড়ক ও সড়কে অবস্থান নেন। তাঁরা পুরোনো খবরের কাগজ, পাটি, সিমেন্টের বস্তা ও পলিথিন বিছিয়ে বসে পড়েন। পার্শ^বর্তী কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাসাবাড়ি, দোকান ও যানবাহনের ছাদে অবস্থান নেন মুসল্লিরা। বিনম্র সুরে আল্লাহর কাছে আকুতি জানিয়ে বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন মারকাজ কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা রবিউল হক সাহেব। তাঁর সঙ্গে মুসল্লি দুই হাত তুলে “আমিন, আমিন ধ্বনি” তোলেন। এ সময় ধর্মপ্রাণ মুসল্লির “আমিন, আমিন ধ্বনিতে” মুখরিত হয়ে ওঠে হাটহাজারীর চারিয়া গ্রামসহ আশপাশের এলাকা। মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে কেঁদে কেঁদে নিজেদের পাপমোচনে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মুসল্লিরা। তাঁরা পাপ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে আকুতি-মিনতি করেছেন। আখেরি মোনাজাতের ইজতেমার শেষে দিনে বাদ ফজর আমবয়ান করেন ভারতের মুরব্বি মাওলানা আবদুর রহমান। এ সময় তারই পার্শ্বে মঞ্চে উপবিষ্ট কাকরাইলের মুরব্বি মাওলানা আবদুল মতিন উক্ত বয়ান বাংলাতে তরজমা করেন। এবার ইজতেমা থেকে ১ চিল্লা ও ৩ চিল্লার জন্য ১৬৩টি জামাত বের হয়েছে বলে এ প্রতিবেককে জানান ইজতেমা কমিটির সদস্য মুফতি জসিম উদ্দিন। ঢাকার টঙ্গী ইজতেমার পুর্বে এ জোড় থেকে সারা দেশে ১৩৯টি জামাত, বিদেশে ৯টি জামাত ও মসতুরার ৭টি জামাত বের হয়েছে। মোনাজাতে অন্যান্যদের মধ্যে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা,সংবাদ কর্মী জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন মাদ্রাসার আলেম-ওলামাবৃন্দরা অংশগ্রহন করেন।