চলতি বছর যশোরের বাঘারপাড়ায় উঠতি আমন ধানে অতিরিক্ত চিটা হয়েছে। ফলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন উপজেলার কয়েক শতাধিক কৃষক। চিটা বেশি হওয়ায় এ বছর উৎপাদন খরচ উঠবে না বলে জানিয়েছেন চাষিরা। চাষিদের অভিযোগ, সময়মতো সার না পাওয়া এবং কৃষি অফিসের পরামর্শ না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ব্রি-৫১, ব্রি-৪৯, ব্রি-৮৭, ব্রি-৭৫, বিনা-১৭, হাবু, গুটি স্বর্ণা, হাইব্রিড ও ধানি গোল্ড জাতের ধান চাষ হয়েছে। এখানকার চাষিদের অভিযোগ, আমন ধান চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি ছিল না। একইসাথে সারেরও সঙ্কটও ছিল।
শেখেরবাতান গ্রামের চাষি আমজাদ আলী জানান, জমি তৈরি থেকে শুরু করে ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত যা খরচ হয়েছে তার অর্ধেক টাকার ধান বিক্রি হবে বলে মনে হয় না। এ বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন। সার, পানি, শ্রমিক মিলিয়ে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৬ মণ ধান হয়েছে। মাড়াই শেষে হিসাব করে দেখা গেছে বিঘাপ্রতি চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
রামনগর গ্রামের চাষি ইউনুছ আলী বলেন, ১২০ শতক জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান লাগান তিনি। মাড়াই করে সর্বমোট ৫২ মণ ধান পেয়েছেন। ধানে অতিরিক্ত চিটা হওয়ায় ফলন কমে গেছে। গত আমন মৌসুমে একই জমিতে ৭৫ মণ ধান হয়েছিল। পাইকপাড়া গ্রামের চাষি আখতারুজ্জামান জানান, এক বিঘা জমিত হাবু জাতের ধান লাগান তিনি। তাতে ফলন হয়েছে ২০ মণ ২০ কেজি। আবাদে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকার মতো। ধানে চিটা বেশি হওয়ায় লাভ তো দূরে থাক, খরচও উঠছে না।
তিনি আরো বলেন, আমন মৌসুমে উপজেলার কোনো কৃষি কর্মকর্তাকে মাঠে পাননি। সময়মতো দিতে পারেননি সারও। উপজেলার ছাতিয়ানতলা বাজারের সার বিক্রেতা আহাদ আলী বলেন, বাজারে সারের কোনো সঙ্কট ছিল না। অনাবৃষ্টির কারণে এবছর একটু বেশি চিটা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমীন সাংবাদিকদের বলেন, এবার আমনের ফলন ভালো। ধানে চিটা হয়েছে এমন অভিযোগ পাইনি বলেও দাবি করেন তিনি।