আন্দামান সাগরে ডুবন্ত একটি নৌকা থেকে ১৫৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে ভিয়েতনামের একটি তেলবাহী জাহাজের নাবিকরা। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১৫৪ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ৪০ জন নারী ও ৩১ জন শিশু।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) আন্দামান সাগর থেকে উদ্ধার করা হয় এই রোহিঙ্গাদের। বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) তাদের মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভিয়েতনামের সংবাদমাধ্যম ভিটিসি নিউজের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাই ডুওং ২৯ নামের একটি ভিয়েতনামি তেলবাহী জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে মিয়ানমারের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রাপথে ডুবতে থাকা নৌকাটি চোখে পড়ে জাহাজের নাবিকদের।
সাগরের যে এলাকায় নৌকাটি অবস্থান করছিল, সেখান থেকে মিয়ানমারের উপকূল আরও ৪৫৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে।
উদ্ধার হাই ডুওং ২৯ জাহাজের নাবিকদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে ভিটিসি নিউজ জানায়, সাগরে নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ও তলদেশ ছিদ্র হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছিল সেটি।
উদ্ধারের পর রোহিঙ্গাদের জাহাজে তোলা হয় ও পরের দিন তাদের মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন নাবিকরা। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন জান্তা, ভিয়েতনামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাই ডুওং ২৯ জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান হাই ডুওং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মেরিন কর্পের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু তাদের কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। মিয়ানমারে যেসব সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী আছে, তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমরা অন্যতম। মূলত দেশটির আরাকান অঞ্চলেই বসবাস রোহিঙ্গাদের। তবে শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে বসবাস করলেও, এখনও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি মিয়ানমার সরকার।
২০১৭ সালে আরাকান রাজ্যে বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সামরিক ছাউনিতে বোমা হামলা চালায় সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। তারপর থেকেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চরম নির্যাতন ও ধরপাকড় শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আরাকানের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলো একের পর এক জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
সেনাবাহিনীর অত্যাচারে টিকতে না পেরে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এছাড়া গত কয়েক বছরে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছেন অনেকে।
সূত্র : রয়টার্স