আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করায় কারাদ-প্রাপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতায় আজ তিনি বাসায় আছেন, নিরাপদে আছেন। বিএনপি কি আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেছে?
বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে সাভারে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কাদের বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যার মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান। তিনি খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িতদের পুনর্বাসিত করেছেন। জেল হত্যাকা- ঘটিয়েছেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পিকনিকের ব্যবস্থা করেছিল। তারা পিকনিক পার্টি ও নালিশ পার্টিতে পরিণত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ক্ষমতা দখলের খোয়াব দেখেছিল। কিন্তু ১০ ডিসেম্বরের আগেই কী হলো, পুলিশ তাদের কার্যালয়ে গিয়ে ১৬০ বস্তা চালসহ ডাল পেল। তারা সমাবেশের নামে পিকনিক পার্টি করতে চেয়েছিল। ঢাকায় আজ সমাবেশ, পাড়ায়, মহল্লায়, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সমাবেশ। কিন্তু ঢাকা সিটি আজ বঙ্গবন্ধুর সৈনিক শেখ হাসিনার কর্মীদের দখলে।
তিনি বলেন, বিএনপি জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে তারা গ্রেনেড হামলা করেছিল যেখানে আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী প্রাণ হারায়।
কাদের আরও বলেন, জেলখানায় হত্যাকা- সংগঠিত করে মুক্তিযুদ্ধের চারজন প্রথমসারির জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছিল যে জিয়াউর রহমান, তার সন্তান তারেক রহমান হাওয়া ভবন তৈরি করেছিল। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে জেল হয়েছিল কিন্তু শেখ হাসিনার উদারতায় তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেছেন, বিএনপি সমাবেশ করছে। শুনলাম তাদের সাতজন এমনি নাকি পদত্যাগ করবেন। পদত্যাগ করার গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের আছে। তবে পদত্যাগ স্পিকারের কাছে করতে হয়, মাঠে ভাষণ দিয়ে হয় না। এগুলো বিএনপির রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি। এতে সরকারের কিছু যায় আসে না।
হানিফ বলেন, বিএনপি মিথ্যাবাদী, ভাওতাবাজির দল। জনগণের সঙ্গে ভাওতাবাজি করে, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গেও ভাওতাবাজি করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল দলের কর্মীদের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনে নাশকতা করে সরকারকে বিব্রত করে সরকার ফেলে দেবে। এ সরকার খালেদা জিয়ার সরকার নয়। শেখ হাসিনার সরকার। আওয়ামী লীগ সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলা যায় না। কারণ আওয়ামী লীগের শেকড় এ বাংলার মাটির অনেক গভীরে। এত গভীরে আছে যে, এই গাছকে বারবার ধাক্কা দিয়েও ফেলা যায়নি। যারা ধাক্কা দিতে এসেছে তাদের কপাল, মাথা ফাটে। জনপ্রিয়তা যাচাই করার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনপ্রিয়তা পরীক্ষা করুন। দেখুন জনগণ কার সঙ্গে আছে। জনগণ কী চায়? দেশের মানুষ উন্নয়ন, অগ্রগতি ও শান্তি চায়। উন্নয়ন, শান্তি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশের মানুষ সন্ত্রাসী কর্মকা- দেখতে চায় না। এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা খালেদা জিয়া ও দ-প্রাপ্ত পলাতক সন্ত্রাসী তারেক রহমানকে দেখতে চায় না- বলেন তিনি। হানিফ বলেন, আমি কয়েকদিন আগে সমাবেশে বলেছি, বিএনপি নেতারা তাদের কয়েকটা সমাবেশে কিছু লোকজন দেখে জোশে হুঁশ হারিয়ে ফেলেছে। হুঁশ হারিয়ে লাগামছাড়া কথা বলতো। এক শিশু বক্তা আছে রফিকুল ইসলাম মাদানি। এক ওয়াজে গিয়ে মাদরাসার কিছু ছেলেদের দেখে বললো সরকার মানি না, সংবিধান মানি, রাষ্ট্র মানি না। পরে পুলিশ যখন ধরে নিয়ে গেলো তখন পুলিশের হাত-পা ধরে বলে ভুল হয়ে গেছে। সামনে মানুষ দেখে বেহুঁশ হয়ে বলে ফেলেছি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির অবস্থা কিছুটা ওরকম হয়ে ছিল। এমনও বললো ১০ তারিখের পর খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে। আমি বলেছিলাম, জোশে বেহুঁশ হলে পুলিশের হাত-পা ধরা লাগবে। এখন তো দেখছেন আপনারা। গত দুদিন ধরে পুলিশের হাত-পা ধরা শুরু হয়েছে। দেশের মানুষকে বিএনপির মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, বিএনপির মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ গড়ার মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়া সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।