আগামী এপ্রিল মাসে উদ্বোধন করা হবে গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজ প্রকল্পের। এ পর্যন্ত ৪ দফায় মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রকল্পের তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেডিকেল কলেজ ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্মানসহ অন্যান্য কাজ শেষ হয়েছে। তবে শেষ হয়নি নাসিং কলেজের কাজ। মেডিকেল কলেজটি হস্তান্তর করা হলেও ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাটির ৯৯.৭০ ভাগ ভৌত অগ্রগতি থাকা সত্যেও হস্তান্তর হয়নি। তবে প্রকল্পটি আগামী এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের লক্ষ্য কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। শেখ সাহেরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ মনোয়ার হোসেন জানান, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় মেসিনারি স্থাপন করা হলেও এখনও কোন অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ডাক্তার, নার্স, ৩য় শ্রেনী, ৪র্থ শ্রেনী ও আউট সোর্সিং মিলে মোট ৫০৭টি পদ থাকলেও নিয়োগ করা হয়েছে মাত্র ৯ জনকে; শুণ্য রয়েছে বাকি ৪৯৮টি পদ। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন ও ওষুধ সরবরা হলেই হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ জাকির হোসেন জানান, ২০১১ সালে ৫২টি আসন নিয়ে শেখ সায়ের খাতুন মেডিকেল কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম শুর হয়। বর্তমানে ৬৫ জন করে ৫টি ব্যাচে মোট ৩৬৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। এছাড়া ১টি ব্যাচ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনালের হাসপাতালে ইন্টার্ন বা শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করছে। তবে শুরু থেকে কলেজের কার্যক্রম গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চললেও হস্তান্তর নিয়ে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে কার্যক্রম শুরু করেছি। গোপালগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের (এইচইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার কে. এম হাসান উজ জামান জানিয়েছেন, ২০১২ সাল থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে, গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল সংলগ্ন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৩৬ একর জমির অধিগ্রহণ করতেই সময় লেগে যায় ৬ বছর। পরবর্তীতে প্রকল্পের মেয়াদ এ পর্যন্ত চার দফায় বাড়ানো হয়েছে। অপরদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীর মৃত্যু জনিত করতে পুনরায় টেন্ডার আহবান করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের কারণে নার্সিং কলেজের নির্মান কাজে বিলম্ব হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক ডাঃ অসিত কুমার মল্লিক জানান, প্রকল্পের মোট ৫২টি ভবনের মধ্যে ৪৩ টি ভবনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং মেডিকেল কলেজটি কতৃপক্ষের কাছে হস্তান্ত করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাদের ভবনগুলি হস্তার নিচ্ছেন না। মূল মেয়াদের মধ্যেই আগামী এপ্রিল মাসে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রত্যয় জানান প্রকল্প পরিচালক। কাজের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরে প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্পে মোট নির্মাণ ব্যয় ৬ শত ৩৩ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার টাকা নির্ধারন করা হয়। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৯৩.০১ শতাংশ এবং গড় ভৌত অগ্রগতি ৯৮ শতাংশ। মেডিকেল কলেজের হস্তান্তর হয়েছে ২০২১ সালে। তাদের সকল কার্যক্রম সেখানেই চলছে। ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনের অগ্রগতি ৯৯.৭০ ভাগ। হাসপাতালের পরিচালক তার জন্য নির্ধারিত কক্ষে বসেই অফিস করছেন। নার্সিং কলেজের অগ্রগতি ৬৮ ভাগ। প্রকল্পের যেটুকু কাজ বাকি আছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তা শেষ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।