আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে টঙ্গীতে আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সাদকে আসতে দিতে চায় না হেফাজতে ইসলাম। তারা মনে করে মাওলানা সা’দ বাংলাদেশে আসলে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য তারা মাওলানা সা’দকে কোনোভাবেই যেন বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া না হয় সেজন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। দুই বছর বন্ধ থাকার পর আগামী বছরের শুরুতে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আবারো অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমা। তবে এবারো দু’টি গ্রুপ আলাদাভাবে ইজতেমার আয়োজন করবে। প্রথম গ্রুপ ১৩-১৫ জানুয়ারি (মাওলানা জোবায়ের পক্ষের লোকজন) ও দ্বিতীয় গ্রুপ ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি (ওয়াসিফ পক্ষের লোকজন) বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবে। গত ১৩ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব ইজতেমার তারিখ নির্ধারণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ভারতের প্রখ্যাত মাওলানা ও তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সা’দের একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এর পর থেকে দুই গ্রুপ দুই পর্বে ইজতেমায় অংশ নিচ্ছেন।
জানা যায়, ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি ওয়াসিফ পক্ষের অনুসারিদের আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির নিজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সা’দকে অতিথি হিসেবে আনার প্রচেষ্টা চলছে। তবে এটিকে ভালো চোখে দেখছে না হেফাজতে ইসলাম। মাওলানা সা’দ বাংলাদেশে আসলে আবারো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, দিল্লির মাওলানা সা’দ সাহেবের বাংলাদেশে আসাকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালে বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। বাংলাদেশের দাওয়াতে তাবলিগের মধ্যে নজিরবিহীন বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ঘরে ঘরে, মসজিদে মসজিদে ফাসাদ তৈরি হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি এবারো ইজতেমা উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশে আসলে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হবে। শান্ত ও সুন্দর পরিবেশ নস্যাৎ হয়ে যাবে। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি, মাওলানা সা’দ সাহেবকে কোনোভাবেই যেন বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া না হয়। হেফাজত নেতারা মাওলানা সা’দের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন। ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে হেফাজত নেতারা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। তবে এ সময় প্রধানমন্ত্রী কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী বলেন, মাওলানা সা’দ ইসলামের আকিদা পরিপন্থী অনেক বক্তব্য দিয়েছেন। সেখান থেকে তিনি এখনো সরেও আসনেনি। যা হক্কানি আলেমরা মানতে পারে না। এ জন্যই ২০১৮ সালে তার বাংলাদেশে আগমনকে ঘিরে সংঘর্ষ হয়েছিল। এবার আবার তাকে বাংলাদেশে আনলে সে রকম কোনো পরিস্থিতি তৈরি হোক আমরা চাই না। এ জন্যই আমরা তার বাংলাদেশে আসার বিরোধিতা করেছি।