পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ব্যয় বাড়াতে আমাদের দেশে উন্নয়ন কাজ বিলম্ব করার ট্র্যাডিশন রয়েছে। যেটি চায়না বা জাপানিরা করে না। তারা মেয়াদের আগে কাজ শেষ করে। মেট্রোরেলের কাজও ৬ মাস আগে শেষ করে তারা টাকা ফেরত দিয়েছে। কিন্তু এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের কাজ বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশিদের চেয়ে চায়নারা অনেক অভিজ্ঞ জানিয়ে ড. আবদুল মোমেন বলেন, তারা চাইলে জনবল ও ইকুইপমেন্ট বাড়িয়ে ২০২৩ সালেই নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ সম্পন্ন করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল ভবনের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছিল। সেটি আমরা সমাধান করেছি। রেলওয়ে ব্যতিরেকে আমার নির্বাচনী ওয়াদাগুলো পালন করতে সক্ষম হয়েছি।
এসময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মো. শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ, প্রকল্প পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুর মোমেন সিলেট এয়ারপোর্ট এলাকার একটি অভিজাত হোটেলে কর অ ল সিলেট আয়োজিত সেরা করদাতা সম্মাননা পুরস্কার দেন।
কর অ ল সিলেটের কর কমিশনার আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট রেঞ্জের উপ মহা পরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম. রফিকুর রহমান, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল প্রমুখ।
১৬
লিড ১ম পাতা
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কোটা প্রথা কেন বাতিল নয়, হাইকোর্টের রুল
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায় রাখা কোটার বিধান বাতিল করা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্য আইনসচিব, জনপ্রশাসন সচিব, শিক্ষাসচিব ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
১৫২ চাকরিপ্রত্যাশীর করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বে এ রুল জারি করেন। আদালতে এদিন রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শামীম সরদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সে অনুসারে এই ১৫২ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু তারা চূড়ান্ত ফলাফলে উত্তীর্ণ হননি। তাদের দাবি, ২০১৯ সালের বিধিমালায় কোটা প্রথার কারণে তারা বি ত হয়েছেন।
২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিধিমালার ৮(২)(গ) বিধিতে বলা হয়, এই বিধিমালার অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদের ৬০ শতাংশ নারী প্রার্থীদের দ্বারা, ২০ শতাংশ পোষ্য প্রার্থীদের দ্বারা এবং অবশিষ্ট ২০ শতাংশ পুরুষ প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করা হবে। (ঘ) বিধিতে বলা হয়, এ নির্ধারিত কোটার শিক্ষকদের মধ্যে প্রত্যেক ক্যাটাগরিতে (নারী ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ ও অবশিষ্ট পুরুষ ২০ শতাংশ) অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; তবে শর্ত থাকে যে উক্তরূপে ২০ শতাংশ কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা যাবে।
এ বিষয়ে রিটকারীদের আইনজীবী শামীম সরদার জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৩৭ হাজার ৫৭৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বরাদ্দ রেখে ২০১৯ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হয়। যেখানে নারী ৬০ শতাংশ, পোষ্য ২০ শতাংশ এবং অবশিষ্ট পুরুষ ২০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ করা হয়। অথচ সংবিধানের ২৯ (৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অসাংবিধানিক। দেশে শত শত শিক্ষিত বেকার যুবক ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেখানে মাত্র ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা রেখে এ নিয়োগ হতে পারে না।
এ কারণে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আদালত শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন। রুলে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ এর ৮(২)(গ) এবং (ঘ) বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন বাতিল ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং মেধাতালিকা অনুসারে নিজস্ব জেলা/উপজেলায় শূন্যপদে রিট আবেদনকারীদের নিয়োগ দিতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কালাবাড়ীর সঞ্জিত সরকার, পাবনার চাটমোহর উপজেলার নতুন বাজারের আনোয়ার হোসেন, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার পানিঘাটার হাফিজুর মোল্লাসহ ১৫২ জন হাইকোর্টে রিট করেন।