পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের মতামতের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। অন্যদের আমাদের গণতন্ত্র শেখানোর প্রয়োজন নেই। আমাদের গণতন্ত্র আছে, মানবাধিকার আছে। গতকাল শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে জাপানি স্টাডিজ বিভাগের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বচ্ছ নির্বাচন নিয়ে ভাবছি। এ দেশের নির্বাচন ভালো কি মন্দ হবে সেটা ঠিক করবে এ দেশের জনগণ। অন্য কেউ না। অন্য কেউ এটা নিয়ে কিছুই করতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ এটা ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ সরকার বুলেটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি উল্লেখ করে মোমেন বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে ব্যালটের মাধ্যমে। আমরা যথাসময়ে নির্বাচন করব। আওয়ামী লীগ এমন দল না যে, কোনো বড় দলকে নির্বাচন করতে দেবে না। সবাইকে নিয়ে আমরা নির্বাচন করি।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সবসময় সরব। দেশটির হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বন্ধু দেশ বলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের অনেক উপদেশ দেয়। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশ ভালো প্রস্তাব পেলে সেটা গ্রহণ করে। আমরা যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করি। এতে করে আমাদের অর্জন বাড়ে। দুই দিনের সফরে ভারত হয়ে আজ ঢাকায় আসছেন মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন অ্যাসিসটেন্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। লু’র সফরে আলোচনায় বিষয়ে জানতে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আমরা আমাদের যেসব ইস্যু আছে সেগুলো তুলব। তারা তাদের ইস্যু তুলবে। আমেরিকার প্রিন্সিপালের সঙ্গে আমরা একমত। তাদের একটা প্রিন্সিপাল হচ্ছে গণতন্ত্র, তারা গণতন্ত্র চায়; আমরাও চাই।
র্যাবের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে আলোচনা নিয়ে মোমেন বলেন, আমেরিকা অন্য ইস্যুতে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমরা তুলে ধরছি এবং তুলে ধরব। আমাদের একটা অনুরোধ থাকবে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যেন বিষয়টাকে বিবেচনা করে। আমাদের মনে হয়, আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করতে পারব।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, লু’র সফরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং নতুন করে যাতে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা না হয়, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা না দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা। জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা জানি না। আমরা জানবো কোথা থেকে? তারা তো আমাদের বলেনি। ঢাকায় বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশের অভ্যন্তীরণ বিষয়ে কথা বলা নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, আপনারা (গণমাধ্যম) তাদের (দূতদের) খোঁচাচ্ছেন। আপনাদের (গণমাধ্যম) মতো অন্য দেশে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের খোঁচায় না। আপনারা খোঁচানো বন্ধ করেন। এ সংস্কৃতিটা বন্ধ করেন।