সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মুরগির বিষ্ঠার তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। সড়কের আশ পাশে ও বসতঘরের কাছেই স্তুপ করে রাখা হয়েছে দুর্গন্ধযুক্ত মুরগির বিষ্ঠা। পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা উপেক্ষা করে মুরগির বিষ্ঠা প্রক্রিয়াজাত না করে একচেটিয়াভাবে ব্যবসা করছেন এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী মহল। সরজমিনে গতকাল শনিবার দেখা গেছে, তাড়াশ-সলঙ্গা আঞ্চলিক সড়কসহ বিভিন্ন পাকা সড়কে মুরগির বিষ্ঠার বস্তা স্তুপ করে ফেলে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। পথচারীরা নাকে মুখে হাত দিয়ে নিঃশ্বাস চেপে ধরে যাতায়াত করছেন দুর্গন্ধযুক্ত এলাকা দিয়ে। ভুক্তভোগী ভ্যান চালক আব্দুর রশিদ ও গৃহবধূ কাজলি খাতুন বলেন, মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধে সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। মুরগির বিষ্ঠার তীব্র দুর্গদ্ধে বমি বমি অবস্থা হয়। ফাতেমা পারভিন নামে আরেকজন ভুক্তভোগী বলেন, আমার বাড়ি তাড়াশ-রানীহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশে বিনসাড়া গ্রামে। মাঝে মধ্যেই ব্যবসায়ীরা মুরগির বিষ্ঠা আমার বাড়ির কাছে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায়। এরপর ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে থাকি। খেতে গেলে বমি লাগে। মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধে বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। জানা গেছে, বছরের পর বছর ধরে মুরগির বিষ্ঠা মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে ব্যবসা করে ফায়দা লুটছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। বিষাক্ত মুরগির বিষ্ঠা কোনোরকম প্রক্রিয়াজাত না করেই মাছের খাদ্য হিসেবে মৎস্যচাষীদের কাছে বেচে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মৎস্যচাষী রহিচ উদ্দিন, আবুল কালাম, কাজেম আলী ও আকতার হোসেন বলেন, মুরগির বিষ্ঠা ব্যবহারে মাছের খাবারের পেছনে ব্যয় কম হয়। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মুরগির বিষ্ঠার ব্যবসায়ী বলেন, মৎস্যচাষীদের কাছে মুরগির বিষ্ঠার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত করা সময় সাপেক্ষ ব্যপার। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুরগির বিষ্ঠা প্রক্রিয়াজাত করে জৈব সার তৈরির জন্য প্রায় চার মাস মাটিতে পুঁতে রাখতে হয়। এভাবে ১০০ কেজি বিষ্ঠা থেকে ৫০ কেজির মতো টিএসপির গুণাগুণ সমৃদ্ধ জৈব সার পাওয়া সম্ভব। এই প্রক্রিয়ায় মুরগির বিষ্ঠা মাছের খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের উচিত মুরগির বিষ্ঠা একটি নির্দিষ্ঠ স্থানে রেখে প্রক্রিয়াজাত করে তারপর মৎস্যচাষীদের কাছে বেচে দেওয়া। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, জনসাধারনের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোনো ব্যবসা করা যাবেনা। এ কারণে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।