নীলফামারীর ডোমারে হাঁস পালন করে স্বাবলস্বী হয়েছে এক সফল আতœকর্মী জয়নাল আবেদীন ও সোহানা দম্পতি। জয়নাল উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের গোসাইগঞ্জ আনন্দ বাজার এলাকার সমর আলীর ছেলে। একদিকে শিক্ষিত বেকার অন্য দিকে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন সিমান্তবর্তি এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন। বাবার সংসারের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে হাঁস পালন শুরু করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন তিনি। তার এই প্রচেষ্টা দেখে বাড়তি আয়ের আশায় এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন হাঁস পালনে। ২০১৬ সালে কৃষি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বেকার হয়ে চাকুরীর জন্য ঘুড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। ডোমার উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তার পরামর্শে ২০১৮ সালে ৩ মাস মেয়াদী যুবউন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে হাঁস, মুরগি ও গাভি পালনের উপরে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে প্রথমে বিভিন্ন প্রজাতির ২শত হাঁসের বাচ্চা দিয়েই বাণিজ্যিক ভাবে হাঁস পালনের যাত্রা শুরু করে জয়নাল। বর্তমানে জয়নালের খামারে চিনা হাঁস, বেইজিং হাঁস, রুপালী হাঁস, খাকি ক্যামবেল সহ প্রায় ২হাজার ৫শত টি হাঁস রয়েছে। এই হাঁস গুলো প্রতিনিয়ত ডিম দিচ্ছে প্রতিদিন তিনি ২২ হাজার টাকার বেশী হাঁসের ডিম বিক্রি করেন। সব মিলে তার খামারে বর্তমানে ১৫ লক্ষ টাকার হাঁস রয়েছে বলে জয়লান আবেদীন জানান। হাঁসের খাবার, খাদ্য তৈরী, ডিম সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বাচ্চা ফুটানোর মেশিন পর্যন্ত নিজে কিনে তা পরিচালনা করেন। তার এই কজে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করেন জয়নালের স্ত্রী সোহানা আক্তার। দুই স্বামী স্ত্রী মিলে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সফল আতœকর্মী হিসাবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। খামার দেখাশুনা করার জন্য ৩ জন শ্রমিকের কর্মস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে সেখানে। জয়নালের খামারে প্রায় খোঁজখবর নেয় উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্ত আবুল কাশের ও সহাকারী কর্মকর্তা এএসএম হাবিব মর্তুজা। অপরদিকে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক সরেজমিনে গিয়ে হাঁসের খামারটি তদারকি করে ভেকসিন ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন জানান, বেকারত্তের বোঝা মাথায় নিয়ে যখন আমি দিশেহারা, যুব উন্নয়নের সহযোগিতায় আমার এই পথচলা। আর এই কজে অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছে আমার সহধর্মীনী সোহানা আক্তার। সরকারী সহায়তা পেলে আগামীতে গরু-ছাগল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও কবুতর পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে গরুর খামারের কাজ চলছে। জয়নানের স্ত্রী সোহানা আক্তার বলেন, আমরা দুজন কঠোর পরিশ্রম করে আজ আলোর মুখ দেখতে পেরেছি এবং সফলতা অর্জন করেছি। তাকে এই কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আমি আনন্দিত। উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, জয়নাল আবেদীন একজন সফল খামারি। প্রাণীসম্পদ বিভাগ থেকে ভেকসিন, ওষুধসহ সব ধরণের সহায়তা করবেন। বেকার হয়ে ঘরে বসে না থেকে জয়নালের মতো উদ্যোগ নিয়ে হাঁস মুরগি পালন করে দেশে প্রোট্রিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তার এই খামার দেখে এলাকা অনেক বেকার যুবক আত্ম কর্মস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশা করেন তিনি।