বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই পদযাত্রার মধ্য দিয়ে সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই- আর কাল বিলম্ব না করে পদত্যাগ করুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণকে তার ভোটের অধিকার প্রয়োগ করার ক্ষমতা দিন। অন্যথায় আপনাদের (সরকার) ভারাক্রান্ত হয়ে চলে যেতে হবে। পালাবার পথ খুঁজে পাবেন না।’ গতকাল শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বেলা ২টায় রাজধানীর বাড্ডায় সুবাস্তু মার্কেটের সামনের সড়কে পদযাত্রা কর্মসূচির আগে দেয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ১০ দফার দাবিতে রাজধানীতে চার দিনের পদযাত্রার আজ প্রথম দিনের কর্মসূচি রাজধানীর উত্তর বাড্ডা সুবাস্তু টাওয়ার থেকে দুপুর ২টা ৩২ মিনিটে শুরু হয়েছে। মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত গিয়ে শেষ হওয়ার কথা। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকার এই নীরব পদযাত্রার মধ্যদিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে এই দানবীয় সরকারকে চলে যেতে বাধ্য করব।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাইয়েরা এখন জীবনযাপন করতে পারছে না। তারা চাল, ডাল, তেল, লবণ কিনতে পারছেন না। আজকে কথা বলতে গেলেই গ্রেফতার, প্রতিবাদ করতে গেলে মামলা। মিথ্যে মামলা, গায়েবি মামলা দিয়ে সমস্ত বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আটক করে রাখা হয়েছে। সমগ্র বাংলাদেশকে এরা একটি কারাগারে পরিণত করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ভোটের অধিকার নেই। সেই ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া, যিনি মানুষের অধিকারের জন্য সারা জীবন কথা বলেছেন, এখনো তিনি গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন, তাকে মুক্ত করতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যে মামলায় বিদেশে নির্বাসিত হয়ে রয়েছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যে মিথ্যে মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে, যারা কারা ঘরে রয়েছেন তাদের মুক্ত করতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আমরা বলেছি, এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনোদিন সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেজন্য এই হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ তাদের ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে।’ ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হকের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, তাবিথ আউয়াল, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলেন। কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে- ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগে পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি। এ ছাড়া ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।