ডিভাইসে নিজস্ব হার্ডওয়্যার ব্যবহারের বিষয়ে অ্যাপল বরাবরই এগিয়ে। বর্তমানে কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্টটি আইফোনে নিজস্ব বায়োনিক চিপ ব্যবহার করছে। ফাইভজি চিপের পাশাপাশি অ্যাপল নিজস্ব ওয়াই-ফাই চিপের উন্নয়নে কাজ করছে বলে জানা গেছে। ২০২৪ সালে এটি বাজারে আনার লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে বিশ্লেষক মিং-চি কুর বক্তব্য এ চিপের উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খবর গিজমোচায়না।
কু জানান, সাময়িক সময়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রযুক্তি জায়ান্ট চিপের উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে ওয়াই-ফাই চিপের জন্য ব্রডকমের ওপরই নির্ভরশীল থাকতে হবে অ্যাপলকে। বিশ্লেষকদের ধারণা, কার্যক্রম বন্ধের পেছনে হয়তো প্রতিষ্ঠানটির সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। এর আগে ব্লুমবার্গের মার্ক গুরম্যান আইফোনের জন্য ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ চিপ উন্মোচনের বিষয়ে জানিয়েছিলেন। ২০২৪ সালে এ চিপের উন্নয়ন ও উৎপাদন শুরু হবে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ ব্রডকমের যন্ত্রাংশকে প্রতিস্থাপন করবে।
কুর মতে, আগের চিপের সঙ্গে ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি যুক্ত করার উদ্যোগ থেকেই সমস্যা তৈরি হয়। সে সঙ্গে একই চিপে ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ যুক্ত করা আরো কঠিন। এসব বিষয়ের কারণে এখন পর্যন্ত চিপের উন্নয়নসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি চিপে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ ও সেলুলার নেটওয়ার্ক যুক্ত করা অ্যাপলের মাস্টার পরিকল্পনার অংশ। ফাইভজি সেলুলার মডেমের জন্য অ্যাপল মূলত কোয়ালকমের ওপর নির্ভরশীল। এ নির্ভরতা কাটাতেও কাজ করছিল অ্যাপল, কিন্তু বর্তমানে সেটির কী পরিস্থিতি তা জানা যায়নি। এছাড়াও অ্যাপল রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি ও ওয়্যারলেস চার্জিং চিপ উন্নয়নেরও কাজ করছে। মূলত স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতেই চেষ্টা চালাচ্ছে অ্যাপল। ভবিষ্যতে যেসব আইফোন আনা হবে সেগুলোয় ৩ ন্যানোমিটার প্রসেস নোডে তৈরি চিপ ব্যবহারেই বতর্মানে ওয়াই-ফাইয়ের উন্নয়ন স্থগিত করেছে অ্যাপল। কু জানান, যন্ত্রাংশের অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে অ্যাপল ব্যাপক হারে চিপ উৎপাদন করতে পারছে না। তিনি আরো জানান, আগামী বছর ওয়াই-ফাই চিপ ব্যবহার অ্যাপলের জন্য হুমকিস্বরূপ হবে। কেননা ওয়াই-ফাইয়ের স্ট্যান্ডার্ড পরিবর্তিত হয়ে ৬ই ও ৭-এ রূপান্তর হবে। আর অ্যাপল নতুন স্ট্যান্ডার্ডের চিপযুক্ত ডিভাইস বাজার আনার ব্যাপারেই মূলত আগ্রহী।
চীনে লকডাউন বিধিনিষেধ সংক্রান্ত জটিলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েনের কারণে উৎপাদন কমিয়েছে টেক জায়ান্টটি। এর ইতিবাচক ফল পাচ্ছে ভারত। শিগগিরই ভারতে অ্যাপলের পণ্য উৎপাদন বাড়িয়ে ৫ থেকে ২৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বরাতে এ তথ্য জানা গেছে। অ্যাপল তাদের সবচেয়ে নতুন মডেলের পণ্যগুলোও ভারতে উৎপাদন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, অ্যাপলের উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের বাণিজ্যিক অগ্রগতির চিহ্ন। অবশ্য কবে থেকে বর্ধিত উৎপাদন শুরু করতে পারে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি পীযূষ গয়াল। অ্যাপলের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।