নীলফামারীর ডোমারে বডারগার্ড সদস্যের পরিচয় দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল ছাত্রীর সাথে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাতের দায়ে ৫প্রতারকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভুগী পরিবারের সদস্য। ঘটনাটি উপজেলার জোড়াবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব জোড়াবাড়ী এলাকায়। মামলা সুত্রে জানা যায়, উক্ত এলাকার এক অসহায় দিনমুজুরের কন্যা মিরজাগঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রীর সাথে মিরজাগঞ্জ গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে রাজ্জাকুল নামক এক ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয়। রাজ্জাকুল নিজেকে বাংলাদেশ বডারগার্ড সদস্যের পরিচয় দিয়ে দীর্ঘ ৬মাস যাবত স্কুল ছাত্রীর সাথে প্রেম ভালবাসায় জড়িয়ে পড়ে এবং বেশ কয়েকবার মেয়েটির সাথে মিরজাগঞ্জ রেলস্টেশন বাজারে দেখা করে। স্কুল ছাত্রীর পরিবারের লোকজন খোজ নিয়ে দেখে ওই এলাকার কবিরের ছেলে রাজ্জাকুল নামে ছেলেটি বডারগার্ডে চাকুরী করে। প্রেম ভালবাসা চলাকালীন সময়ে রাজ্জাকুল তার স্ত্রী নারগিছ বেগমকে নিজের মা সাজিয়ে ফোনে স্কুল ছাত্রীর পরিবারের লোকজনের সাথে বিয়ের কথা পাকা করেন। এরই মধ্যে গত ০৩/০৫/২০১৯ ইং তারিখে রাজ্জাকুলের পায়ে গুলি লেগেছে জানিয়ে চিকিৎসার জন্য স্কুল ছাত্রীর পরিবারের কাছে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয়। টাকা নেয়ার পর রাজ্জাকুলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে খোজ নিয়ে জানা যায়, কবিরের ছেলে সুস্থ অবস্থায় যশোরে কর্মরত আছে। রাজ্জাকুল অন্যের নাম পরিচয় ব্যবহার করে স্কুল ছাত্রীর সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করে টাকা আত্মসাত করেছে। এ বিষয়ে স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত ২৫/১০/২০১৯ ইং তারিখে ডোমার থানায় সাধারণ ডায়রী নং-১১৩৭ দায়ের করেন। ডোমার থানার এএসআই নুরুল হুদা ডায়রীর বিষয়ে তদন্ত শুরু করলে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে প্রতারকের ফোন নম্বর মোবাইল ট্রেকিংগের মাধ্যমে এনআইডি নং-১৯৮০৭৭৩৪৪৭০০০০৮৩, ১৯৯২৭৩১১৫৪৭০০০২০৭ বাহির হয়। এনআইডির সুত্রধরে ডোমার নির্বাচন অফিস হইতে সার্চ দিলে প্রতারকের ভোটার আইডি কার্ড বের হয়। যাহাতে প্রথম এনআইডিতে মোঃ রাজ্জাকুল ইসলাম ,পিতা- বারিউল হক, অপরটিতে মোছাঃ নারগিজ বেগম, স্বামী- মোঃ রাজ্জাকুল ইসলাম, সাং- উপেনচৌকী ভাজনী, ৩নং ওয়ার্ড গরুঘুমা (ওকড়াবাড়ী) ইউনিয়ন- দেবীগঞ্জ, থানা- দেবীগঞ্জ, জেলা- পঞ্চগড় পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হয় যে, তারা দুই স্বামী স্ত্রী মিলে স্ত্রীকে মা সাজিয়ে বিয়ের কথা বলে স্কুল ছাত্রীর টাকা আতœসাত করেছে। শেষে অভিযান শুরু হয় তাদের আসল ঠিকানায়। সেখানে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়। রাজ্জাকুলের স্ত্রী নারগিজ বেগম ও তাদের ৩টি সন্তান রয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে দহলা খাগড়াবাড়ী (হাজীপাড়া) গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে আপোষ মিমাংসার কথা হয় এবং গত ২৫/০৭/২০২০ ইং তারিখে ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিতে চায় তারা। অপরদিকে ওই তারিখে সাদ্দাম হোসেন ও তার দুই সহযোগি খারিজা ভাজনী এলাকার মৃত- হামিদুল হকের ছেলে রাব্বু, ও ভাজনী বাবুল বাজার এলাকার মৃত- বাবুল হোসেনের ছেলে শাহিন আলম খোকন তারা ৩ বন্ধু মিলে রাজ্জাকুলের কাছে টাকা উত্তলন করে স্কুল ছাত্রীকে ফেরত না দিয়ে নিজেরাই আত্মসাত করে। অসহায় স্কুল ছাত্রীর পরিবারের লোকজন বারবার তাদের কাছে টাকা চাইতে গেলে তারা টালবাহানা করে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে প্রতারচক্র। এ বিষয়ে স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে গত ৬সেপ্টেম্বর নীলফামারীতে জনাব মোঃ মেহেদী হাসান, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৪২০/৪০৬/৫০৬ (২) ধারায় রাজ্জাকুল, নারগিছ, সাদ্দাম, রাব্বু ও খোকন ৫জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসাবে গন্যকরে ডোমার থানায় পাঠিয়ে দেয়। প্রতারক রাজ্জাকুলসহ তার ৪ সহযোগির দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেন ভুক্তভুগী অসহায় স্কুল ছাত্রীর পরিবার।