অ্যাডিনোভাইরাসের পর এবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে নতুন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। ইনফ্লুয়েঞ্জা এইচ৩এন২ একবারে নতুন একটি স্ট্রেইন। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা আছে এই ভাইরাসের। শুধু দ্রুত ছড়াচ্ছে না এর পাশাপাশি এই ভাইরাস বহু ক্ষেত্রে গুরুতর দিকে নিয়ে যাচ্ছে পরিস্থিতি। কারও কারও হচ্ছে নিউমোনিয়া। সচেতন থাকাই এখন বাঁচার একমাত্র পথ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি একসঙ্গে শুরু হচ্ছে। তারপর কিছুদিন যেতেই কমে যাচ্ছে জ্বর। তবে কাশি থামছে না। অনেকদিন ভোগাচ্ছে। এই বিষয়ে কলকাতার বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রুদ্রজিৎ পাল জানিয়েছেন, এ সময় সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীরই সারছে না কাশি। এদের দ্রুত চিকিৎসা দরকার। না হলে বিপদ ঘটতে পারে।
কেন থাকছে কাশি? বিশেষজ্ঞের মতে, এই ভাইরাস অনেক সময় ফুসফুসে সমস্যা তৈরি করছে। ফুসফুসের শ্বাসনালিতে হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি। ফলে জ্বর সেরে যাওয়ার পরও কাশি থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেকের আবার দমকা কাশি ৪ সপ্তাহ থেকে ২ মাস পর্যন্তও থাকছে। যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে কাশির প্রবণতা থাকছে বেশি। পাশাপাশি অ্যাজমা ও সিওপিডি থাকলে তো কথাই নেই। সেক্ষেত্রেও কাশি হচ্ছে। এছাড়া এই কাশি রাতের দিকে বেশি বাড়ছে। শুলেই কাশি হচ্ছে। একবার শুরু হলে আর থামছে না। এক নাগাড়ে কাশতে হচ্ছে, এমনটাই জানান ডা. পাল। তিনি আরও জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাশিতে কফ থাকছে না। শুষ্ক কাশি হচ্ছে। বারবার কাশির কারণে গলায় ব্যথাও হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের কাছে আসা জরুরি।
এর চিকিৎসা কী? ডা. পালের মতে, এই রোগের প্রধান চিকিৎসা হল কফ সিরাপ। বিভিন্ন ধরনের কাফ সিরাপ আছে। তবে নিজের ইচ্ছামতো সিরাপ কিনে খাবেন না। একজন চিকিৎসকই সঠিক কফ সিরাপ আপনার জন্য বেছে দিতে পারেন। পাশাপাশি নিয়মিত স্টিম নিন। গরমে পানির ভাঁপ নিন নাক-মুখ দিয়ে টানুন। এভাবেই মিনিট পাঁচেক করুন। এতে কাশি কমবে দ্রুত। তবে অনেকেই অহেতুক এই অসুখে অ্যান্টিবোয়াটিক খান। ভাইরাসজনিত অসুখে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে তেমন লাভ হয় না। একমাত্র সেকেন্ডারি ইনফেকশন থেকে বাঁচার জন্য চিকিৎসক অ্যান্টিবয়োটিক দিতে পারেন।
এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে কোভিড নিয়ম মেনে চলুন। নিয়মিত হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। মাস্ক পরুন। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিন। ব্যাস এই কাজগুলো করলেই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই দুশ্চিন্তা নয়। সূত্র: এনডিটিভি/এই সময়