তীব্র তাপ প্রবাহে এখন জনজীবন অতীষ্ট। এই গরমে একটু স্বস্তিতে আছেন তারা, যাদের ঘরে আছে এসি। আবার অনেকেই এই গরম সহ্য করতে না পেরে এসি কিনছেন। যারা নিয়মিত এসি ব্যবহার করেন, তাদের কমবেশি ধারণা আছে সেটি রক্ষণা-বেক্ষণে কী করণীয় আর কী নয়!
তবে নতুন ব্যবহারকারীদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই কীভাবে বা কতদিন পরপর এসি সার্ভিসিং করতে হয় কিংবা কীভাবে এসি থেকে দুর্ঘটনা ঘটে ইত্যাদি। অতীতে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যেখানে এসি বিস্ফোরণে অনেকে আহত-নিহত হয়েছেন।
এখন যেহেতু দেশের বিভিন্ন মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে, তাই সবারই সতর্ক হওয়া জরুরি। বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের ব্যবহার ও দিকনির্দেশনা মেনে সেগুলো অপারেট করতে হবে। না হলে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
এসি বিস্ফোরণ কেন ঘটে? বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকে রুমের লোড অনুপাতে এসি ব্যবহার করেন না। ফলে এসি অনেকক্ষণ ধরে চলার পর ঘর ঠান্ডা হয়। ফলে এসি অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। নি¤œমানের এসি কিনলে সেগুলোর ভেতরে ফ্যান, তারের, বিদ্যুতের ব্যবস্থাগুলো ঠিক থাকে না। ফলে সেখানেও কারিগরি ক্রুটি দেখা যায়, যা অনেক সময় আগুনের সূত্রপাত করতে পারে।
এসি দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ হলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। ফলে কারিগরি ক্রুটির কারণে এসিতে আগুন ধরে যেতে পারে বা এসির গ্যাসে আগুন লেগে সেটি ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অনেক সময় উইন্ডো এসির সামনে জানালা বা দরজার পর্দা চলে এলে বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়। সেটিও এসিকে গরম করে তুলতে পারে বলে তিনি জানান।
এসি দুর্ঘটনার সম্ভাব্য আরও কয়েকটি কারণ হলো- ১. অনেক পুরোনো বা নি¤œমানের এসির ব্যবহার করা
২. রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক ক্ষমতার এসি ব্যবহার না করা
৩. কম্প্রেসরের ভেতরে ময়লা আটকে জ্যাম তৈরি হওয়া
৪. এসি থেকে গ্যাস লিক হওয়া ও সেটি রুমে বা এসির ভেতরে জমে থাকা
৫. দীর্ঘক্ষণ টানা এসি চালানো, যার ফলে এসির প্রেশার বেড়ে যায় ও সেটিকে গরম করে তোলে
৬. এসির ভেতরের বা বাইরের বৈদ্যুতিক তার নড়বড়ে হয়ে থাকা, যা শর্টসার্কিটের তৈরি করতে পারে
৭. বৈদ্যুতিক হাই ভোল্টেজের কারণে ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ওপর চাপ তৈরি হওয়া
৮. অনেকদিন এসির সার্ভিসিং না করানো ইত্যাদি।
এসি দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি:১. পেশাদারদের মাধ্যমে নিয়মিত সার্ভিসিং করানো
২. রুমের আকার অনুযায়ী সঠিক মাত্রার এসি নির্ধারণ
৩. নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ডের এসি কেনা
৪. দীর্ঘসময় একটানা এসি না চালিয়ে মাঝে মধ্যে বিরতি দেওয়া
৫. বৈদ্যুতিক সংযোগ, সকেট, ফিল্টার নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা
৬. হাই ভোল্টেজ এড়াতে বাড়িতে সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা ও
৭. বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় এসির ব্যবহার বন্ধ রাখা। এছাড়া বাড়ির ছাড়ে বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। সূত্র: বিবিসি