এশিয়ার সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই নারী। তারা হলেন- বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক ও অণুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী।
প্রতিবছরের মতো এবারও এশিয়ার শীর্ষ শত বিজ্ঞানীর তালিকা প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী এশিয়ান সায়েন্টিস্ট। গবেষণায় অনবদ্য অবদান রাখা বিজ্ঞানীদের নিয়ে ২০১৬ সাল থেকে তালিকা প্রকাশ করে আসছে এশিয়ান সায়েন্টিস্ট। সম্প্রতি অষ্টমবারের মতো ২০২৩ সালের তালিকা প্রকাশ করলো প্রতিষ্ঠানটি। মোট ১৭টি ক্যাটাগরিতে এশিয়ার শীর্ষ ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকা প্রকাশ করে সাময়িকীটি।
বাংলাদেশের এ দুই নারী বিজ্ঞানীর সঙ্গে শীর্ষ ১০০ জনের তালিকায় রয়েছেন ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা।
অনুজীব বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা ‘লাইফ সায়েন্সে’ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণায় ভূমিকা রাখছেন তিনি। চিকুনগুনিয়ার মতো যেসব ভাইরাস শিশুদের ভোগাতে পারে তা নিয়েও কাজ করছেন এ বিজ্ঞানী। শিশুদের ক্ষেত্রে এ ভাইরাস মস্তিষ্কে আক্রমণ করে, সেঁজুতি সাহার দলের সদস্যরা তা প্রমাণ করেছেন।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণায় অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন সেঁজুতি। তিনি ২০২০ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল পোলিও ইরেডিকেশন ইনিশিয়েটিভের টিআইএমবির সদস্য নিযুক্ত হন। সেঁজুতি সাহা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালক। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম করোনাভাইরাসের জিন নকশা উন্মোচন করেন।
অন্যদিকে গাওসিয়া ওয়াহিদুন্নেছা চৌধুরী ‘সাস্টেইন্যাবিলিটি’ খাতে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পর ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা এ নারী বিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা ওয়াইল্ডটিমের বোর্ড সদস্য। তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির একটি গবেষণা দলেও কাজ করেছেন।
এছাড়া প্লাস্টিক দূষণে পরিবেশ ও মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে একাধিক গবেষণা রয়েছে গাওসিয়ার। জলজ বাস্তুতন্ত্র ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণে অবদানের জন্য ২০২২ সালে তিনি ওডব্লিউএসডি-এলসেভিয়ার ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড পান। মাছ ধরার পরিত্যক্ত জাল নতুন করে ব্যবহার উপযোগী করে প্রস্তুত করার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি গ্রামীণ নারীদের কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছেন।