প্রাত্যহিক জীবনে নানা মানুষের সাথে আমাদের ওঠাবসা হয়। দেখা যায় কাউকে আমাদের ভালো লাগে। তার সংসর্গ আমাদের পরকালীন জীবনের জন্য কল্যাণকর মনে হয়। সেই ভালো লাগা থেকে আমরা সেই ব্যক্তিকে ভালোবাসতে শুরু করি। তার সংস্রব নিজের জন্য উপকারী মনে করি। আবার কখনো এর উল্টোও হয়। কাউকে ভালো লাগে না। তার থেকে দূরে থাকাই নিজের জন্য মঙ্গল মনে হয়। দুটোই হয়। পৃথিবীর নিয়মও এমনটিই। জগতের সবাইকে ভালো লাগবে না। আবার সবাইকে খারাপও লাগবে না। তো এই যে ভালো লাগা-খারাপ লাগা- তা যদি হয় একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাহলে এই সংসর্গ লাভ করা এবং দূরে থাকা কত না উত্তম হবে আমাদের জন্য!
রাসূল সা: সে কথাই তো বলেছেন, ‘আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- আমার সম্মান ও পরাক্রমের খাতিরে যারা পরস্পরকে ভালোবাসে (কিয়ামতের দিন) তাদের জন্য হবে নূরের মিম্বর। নবী ও শহীদরাও তাদের মর্যাদা দর্শনে গিবতা (ঈর্ষা) করবে।’ (জামে তিরমিজি-২৩৯০)
আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- নবী সা: বলেছেন, ‘যে দিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না, সে দিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন- ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক; ২. সে যুবক যার জীবন গড়ে উঠেছে তাঁর রবের ইবাদতের মধ্যে; ৩. সে ব্যক্তি যার কলব মসজিদের সাথে লেগে রয়েছে; ৪. সে দু’ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর ওয়াস্তে, একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য; ৫. সে ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয়া রূপসী নারী আহ্বান জানায়; কিন্তু সে এই বলে তা প্রত্যাখ্যান করে যে- আমি আল্লাহকে ভয় করি; ৬. সে ব্যক্তি যে এমন গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না; ৭. সে ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর জিকর করে, ফলে তার দু’চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হয়।’ (বুখারি-৬৬০)
নবী সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে দান করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই মানা করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যেই ভালোবাসে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যেই শত্রুতা পোষণ করে, আল্লাহর উদ্দেশ্যেই বিয়ে-শাদি করে, সে তার ঈমান পরিপূর্ণ করল।’ (জামে তিরমিজি-২৫২১) শিক্ষার্থী : জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া, দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।