মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বিশেষ সিএসআর তহবিলের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা খাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা  ডেঙ্গুতে আরো ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২৯৭ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কার বিষয়ে অগ্রগতি জানালেন কমিশনপ্রধানেরা বৃটেনে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আপসানা হত্যা-গণহত্যাসহ গুমের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে ৮০টিরও বেশি অভিযোগ ৪ মহানগর ও ৬ জেলায় কমিটি অনুমোদন বিএনপির মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল জানা যাবে কখন?

সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছে বিভিন্ন ব্যাংক

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩

ব্যাংকগুলো ঋণের সুদের হার বাড়ানো শুরু করেছে। এরই মধ্যে গ্রাহকভেদে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কিছু ব্যাংক এরই মধ্যে নতুন সুদহার আরোপ করে বাড়তি কিস্তি কাটাও শুরু করেছে। তবে কিছু ব্যাংক অপেক্ষা করছে পরিস্থিতি বুঝে ওঠার জন্য। যদিও ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ যেভাবে বাড়িয়েছে, আমানতের সুদ সেভাবে বাড়ায়নি।
ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়লে আমানতের সুদহারকে তা আরও ঊর্ধ্বমুখী করবে। বর্তমানে আমানতের বিপরীতে গড় সুদ ৬ শতাংশের ঘরে রয়েছে। তবে তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা অনেক ব্যাংক ৮ শতাংশ সুদেও আমানত সংগ্রহ করছে।
প্রসঙ্গত, ২ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে ‘স্মার্ট’ (সিক্স মান্থস মুভিং এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল) সুদহার করিডোর। এই নিয়মে সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের ওপর, যা স্মার্ট নামে পরিচিত করার চেষ্টা চলছে। এর ফলে ব্যবসায়ী ও ব্যাংকের মালিকদের দাবির মুখে চালু হওয়া ৯ শতাংশ সর্বোচ্চ সুদহারের সীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ। এই নিয়মের ফলে সব ধরনের ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়ছে।
অর্থাৎ ‘স্মার্ট’ পদ্ধতিতে প্রতি মাসের শুরুতে এই হার জানিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মে মাসে স্মার্ট ছিল ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা জুনে কমে হয়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। কোনও ব্যাংক মে মাসের হার ও কোনও ব্যাংক জুন মাসের হারকে বিবেচনায় নিয়ে জুলাই থেকেই নতুন সুদ নির্ধারণ করেছে। অবশ্য সুদহার নির্ধারণে বেশির ভাগ ব্যাংক একেবারে সর্বোচ্চ সীমাকে বেছে নিয়েছে। সাধারণত, ব্যাংকগুলো তারল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সম্পদ-দায় ব্যবস্থাপনা কমিটি (অ্যালকো) আমানত ও ঋণের সুদহার নির্ধারণ করে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের সঙ্গে ৩ শতাংশ মার্জিন যোগ করে ঋণের সুদহার নির্ধারণ করা যাবে। অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি (সিএমএসএমই) ও ভোক্তা ঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণে আরও ১ শতাংশ তদারকি মাশুল যুক্ত হবে। কৃষি ও পল্লিঋণের সুদহার নির্ধারণ করা যাবে স্মার্টের সঙ্গে ২ শতাংশ মার্জিন যোগ করে। জুনে স্মার্ট ছিল ৭ দশমিক ১০ শতাংশ।
ফলে ব্যাংকঋণের সুদহার এখন ১০ দশমিক ১০ শতাংশ। আর সিএমএসএমই ও ভোক্তা ঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত ঋণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণে আরও ১ শতাংশ তদারকি মাশুল যুক্ত করে সুদহার ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। কৃষি ও পল্লিঋণের সুদহার হবে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। আগে কৃষিঋণে সুদহার ছিল ৮ শতাংশ। অন্য সব ঋণে সুদহার ছিল ৯ শতাংশ। আর ক্রেডিট কার্ডে সুদহার আগের মতোই সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বহাল আছে।
এদিকে জুলাই থেকেই নতুন সুদ হার নির্ধারণ করেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক। এই ব্যাংক দুটি বড়, ছোট ও মাঝারিদের জন্য মাশুল বাদে সুদহার ১০ দশমিক ১০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক ছোট, মাঝারি ও বড়দের মেয়াদি এবং চলতি মূলধন ঋণের সুদহার ৮ দশমিক ১০ থেকে ১০ দশমিক ১০ শতাংশ কার্যকর করেছে। এ ছাড়া বেসরকারি প্রাইম ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকে একইভাবে সুদহার বাড়িয়েছে।
বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকও বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফায় পরিবর্তন এনেছে। ইসলামী ব্যাংক প্রধান কার্যালয় থেকে সব শাখায় পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ও গাড়ি কেনার জন্য বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। এর সঙ্গে ১ শতাংশ তদারকি মাশুল যুক্ত হবে। সিএমএসএমই বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১১ থেকে ১১ দশমিক ১৩ শতাংশ। সিএমএসএমই খাতের রফতানি অর্থায়নে মুনাফা হবে ৯ শতাংশ। কৃষিঋণের মুনাফা হবে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।
এ ছাড়া করপোরেটদের চলতি মূলধন বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১০ শতাংশ, রফতানিতে ৮ শতাংশ, গাড়ি কেনায় ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ ও অন্য সব ঋণে ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। ব্যাংকটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে বিনিয়োগের ওপর মুনাফা বাড়িয়েছে, যা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে।
একইভাবে নতুন মুনাফা নির্ধারণ করা শুরু করেছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও। একই রকম সুদহার নির্ধারণ করেছে এক্সিম ব্যাংকও।
অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল, গ্রাহককে না জানিয়ে কোনোভাবেই নতুন সুদহার প্রয়োগ করা যাবে না। গ্রাহকের সম্মতির ভিত্তিতে ব্যাংক স্থির বা পরিবর্তনশীল যেকোনও একটি সুদহার ঠিক করতে পারবে। অর্থাৎ ব্যাংক চাইলে সর্বোচ্চ মার্জিনের মধ্যে যেকোনও একটি অঙ্কে সুদহার নির্ধারণ করে দিতে পারে। তবে কোনও ব্যাংক ছয় মাসের আগে কোনও গ্রাহকের সুদহার বদলাতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও বেসরকারি মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনও কোনও ব্যাংক জুলাই থেকে নতুন সুদহার কার্যকর করেছে। এর আগে থেকেই আমানতের সুদ বাড়ানোর জন্য চাপ শুরু হয়েছে। অনেক ব্যাংক ৮ শতাংশ সুদে আমানত নিচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com