সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়ীয়ায় বেড়িবাঁধ সংলগ্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মাধুর্যে অপরূপ লীলাভূমি আকিলপুর সমুদ্র সৈকত। সী-বিচটি লোনা-বালির বাতাসে শরীর ও মনের শিহরণ জাগিয়ে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আলিঙ্গনে কাছে টানছে প্রতিনিয়ত। ছোট কুমিরা বাজারের পশ্চিমে নূরীয়া মাদ্রাসা কিংবা নিমতলা রোড ঘেঁষে সোয়া কিলোমিটার পথ ধরে পশ্চিমে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন মনোরম গ্রামে আকিলপুর সী-বিচের অবস্থান। ২০১৭ সালে ৯ ডিসেম্বর ‘‘বাপাউবোর আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলের পোল্ডার নং-৬১/১ এর বিভিন্ন অবকাঠামোর ভাঙ্গন প্রতিরোধ, নিষ্কাষণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে পূনর্বাসণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২.১৫০ কিলোমিটার ঢাল সংরক্ষণসহ সী-ডাইক নির্মাণ কাজের শুভ উদ্ভোধন করেন তৎকালিন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসূল ইসলাম মাহমুদ। দীর্ঘ সময় ও বিপুল সরকারী অর্থ ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি আকিলপুরবাসির বহুবছরের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়। প্রায় ২কিলোমিটার বাঁধে পা ছোঁয়া কংক্রিটের ব্লক বেষ্টিত চেয়ারগুলোতে বসলে মনে হয় যেন ফোমে জড়ানো ঘর সাজানো সোফা। আবার ব্লক বেষ্টিত আসনগুলো দুর দৃষ্টিতে তাকালে চোখের সামনে ভেসে উঠবে ফ্লোরে টাইলস বিছানো মনোরম দৃশ। বড় কুমিরার নিউ রাজাপুরের বাসিন্দা ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন ষ্টার জানান, দর্শনার্থীদের প্রশান্তির খোরাক এ বাঁধ ও সমুদ্র সৈকত। সী-বিচটি প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে ভ্রমণপ্রেমীদের সংখ্যা। ছুটির দিনে পর্যটকের সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি দেখা যায়। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের মতো নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগ আকিলপুরবাসির নিত্য সঙ্গী হলেও মাটির বাঁধকে টেকসই করতে বেড়িবাঁধে দেওয়া কংক্রিটের ব্লক রীতিমত দশর্নীয় স্থানে রূপ নিয়েছে। স্থানীয় সি.এন.জি চালক আকতার হোসেন ও আব্দুস সালাম রিপন জানান, পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে থাকায় লাইনের সিএনজিগুলো ব্যস্ত সময় পার করছে। আকিলপুর জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আলা উদ্দিন জানান, আমার বাড়ীর সামনে আকিলপুর সি-বীচ। অসংখ্য পর্যটকের আগমণে মুখরিত সী-বিচটি যেন হারানো ঐতিহ্য পুনরায় ফিরে পেয়েছে। ৭নং কুমিরা ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউসুপ শামীম জানান, পাহাড় আর সমুদ্র বরাবরই আকৃষ্ট করে পর্যটকদের। সমুদ্রে প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য আর শীতল বাতাসের স্পর্শ পেতে হলে আকিলপুর সী-বিচ একটি চমৎকার স্পট। সমুদ্রের স্রোত আর আকাশের সাদা মেঘের ভেসে বেড়ানোর চমৎকার দৃশ্যে খুবই মনোরম আকিলপুর বেড়িবাঁধ। সেখানে শান্ত ও নিমর্ল পরিবেশ, সঙ্গে সমুদ্রের স্রোতের কলতান যে কাউকেই মুগ্ধ করবে অনায়াসে। লতিফা ছিদ্দিকী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ লোকমান মিয়া জানান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর গণ-মাধ্যমের প্রচারণায় আকিলপুর সী-বিচে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা, পরিবেশ, পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থা কিংবা আবাসিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারী সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য।