সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়ীয়া ইউপির ৯নং ওয়ার্ডস্থ শান্তিপ্রিয় জনপদ আকিলপুর। সমুদ্র উপকূলীয় গ্রামটিতে বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থায় ঘর্ণিঝড়সহ শ্রাবনের অতি বৃষ্টিতে দেখা দিতে পারে মারাত্মক ঝুঁকির। সামান্য বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে গ্রাম রক্ষা বাঁধটি। তাতে উপকূলীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া সহ ভাঙ্গা বাঁধে আবাদি জমির ফসল, মৎস্য চাষ ও বসতবাড়ি নিয়ে চলমান বর্ষায় মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা জকিল আহমদ(৭০) জানান, শ্রাবনের বৃষ্টিতে বসতবাড়ী ও ফসলি জমি রক্ষায় মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকাবাসী। তিনি গ্রামবাসীদের রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন। কুমিরা ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ ইউসুফ শামীম জানান, ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ধংসাত্মক পরিনতি। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে সমুদ্র উপকূলে বসবাসকারীদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার যেন শেষ থাকে না। সেক্ষেত্রে টেকসই বাঁধের গুরুত্ব খুবই বেশি। স্থানীয় দোকানদার মোঃ ইদ্রিস আলম জানান, উপকূলীয় এলাকায় এমনিতেই বৃষ্টিপাত হয় বেশি। প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের প্রাথমিক ধাক্কাটাও উপকূলীয় অঞ্চলকে অত্যাধিক সহ্য করতে হয়। অথচ বর্ষা এলেই গ্রাম রক্ষা বেড়িবাঁধে দেখা দেয় ফাটল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বেড়িবাঁধ রক্ষণা-বেক্ষনের প্রকল্প গ্রহন করে। কিন্তু বাঁধের কাজ তেমন টেকসই না হওয়ায় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে দূর্বল বাঁধ সহজেই ভেঙ্গে পড়ে। বাড়ি-ঘর, মৎস্য প্রকল্প কিংবা ফসলি জমিতে নোনাজল ঠেকাতে পাওবোর টেকসই বাঁধ মেরামতের আশায় প্রহর গুনছে উপকূলবাসী। এদিকে আকিলপুরে ভাঙ্গা বাঁধের উত্তরাংশে রয়েছে সরকারী অর্থায়নে ব্লক বিছানো দৃষ্টিনন্দন ভাঙ্গন প্রতিরোধ টেকসই বাঁধ। অত্যাধিক সামুদ্রিক জোয়ারে সেখানে টেকসই বাঁধের ব্লকও তলিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে “বাপাউবোর আওতায় উপকূলীয় অঞ্চলের পোল্ডার নং-৬১/১ এর অবকাঠামোর ভাঙ্গন প্রতিরোধ, নিষ্কাষণ ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে পুনর্বাসন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২.১৫০ কিলোমিটার ঢাল সংরক্ষণসহ সী-ডাইক নির্মাণ কাজের শুভ উদ্ধোধন করেন তৎকালিন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। দীর্ঘ সময় ও বিপুল সরকারী অর্থ ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি আকিলপুরবাসির বহুবছরের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেয়। প্রায় ২ কিলোমিটার বাঁধে পা ছোঁয়া সিমেন্টের ব্লক বেষ্টিত দৃষ্টিনন্দন আসনগুলো দুর দৃষ্টিতে তাকালে চোখের সামনে ভেসে উঠবে ফ্লোরে টাইলস বিছানো মনোরম দৃশ্য। কিন্তু সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া সহ ভাঙ্গা বাঁধের নাজুক অবস্থায় উত্তরাংশে সরকারী অর্থায়নে ব্লক বিছানো দৃষ্টিনন্দন ভাঙ্গন প্রতিরোধ টেকসই বাঁধটি গ্রাম রক্ষার কার্যকর ভূমিকা দেখছে না এলাকাবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধের প্রাথমিক মেরামত সম্পন্ন করেছেন তারা। সীতাকুণ্ডের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ বাধেঁর সংস্কার ও মেরামত কাজে বড় প্রকল্পের আওতায় বরাদ্ধ পেতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।