ঝালকাঠি সদরের ছত্রকান্দা এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ছিটকে পুকুরে পড়ে গেছে। এ ঘটনায় শিশুসহ ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আরও ২০ জন আহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠির সিভিল সার্জন জহুরুল ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আজ সকালে ভান্ডারিয়া থেকে বাশার স্মৃতি পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহি বাস বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। ঝালকাঠি সদরের ছত্রকান্দা এলাকায় এসে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের পুকুরে পড়ে উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। দুর্ঘটনায় কবলিত বাস থেকে একে একে ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আহত হন আরও ২০ জন । তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ২৩ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যেও কয়েকজন আশঙ্কাজনক রয়েছেন।
ইজিবাইককে সাইড দিতে গিয়েই বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে: ঝালকাঠি সদরে একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। জীবিত ২৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধার যাত্রীদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বাসটি একটি ইজিবাইককে সাইড দিতে গেলে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে গতকাল শনিবার ২২ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় ইউপি ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, দুপুর ১২টার দিকে ডুবন্ত বাসটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে নিহত যাত্রীদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থেকে ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী বাস বাশার স্মৃতি পরিবহন। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় পৌঁছালে ইউপি ভবনের সামনের মোড় ঘুরতেই একটি ইজিবাইকে সাইড দিতে গিয়ে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টা চালান। পরে ফায়ারসার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রথমে ১৩ জন ও পরে আরও চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার জীবিত ২৩ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বৈশাখী বড়াল নিহত ও আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
অসুস্থ নাইম বেঁচে গেলেও মারা গেলেন বাবা: আট বছরের ছেলে নাইমকে ডাক্তার দেখাতে বরিশালের বাসে উঠেছিলেন পিরোজপুরের দক্ষিণ ভান্ডারিয়ার বাসিন্দা তারেক (৪০)। ভান্ডারিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল ৯টায় বাশার স্মৃতি পরিবহন নামের বাসটির যাত্রী হন তারা। সারা পথে খুব ধীরে গাড়ি চালানোয় যাত্রী সংগ্রহে নির্ধারিত সময়ের বেশিরভাগই শেষ হয়ে যায়। পরে বেপরোয়া গতিতে চলতি শুরু করে গাড়িটি। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা এলাকায় পৌঁছালে গতি না কমিয়ে একটি ইজিবাইকে সাইড দিতে গেলে বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে যায়। এ ঘটনায় বাসের ১৭ যাত্রী নিহত হন। জীবিত ২৩ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদের মধ্যে তারেক মারা গেলেও শিশু নাইমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারেককে সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আহাজারি করতে করতে এসব বলছিলেন নিহত তারেকের ভাই সাগর। সাগর বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বৈশাখী বড়াল দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।