শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন

এখনও সময় আছে অবিলম্বে পদত্যাগ করুন

শাহ্জাহান সাজু:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

সরকারকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার লক্ষ্যে সরকারকে এখনই পদত্যাগ করার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখনও সময় আছে, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমেই আপনাদের পতন হবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের বলেছেন, আপনারা ভয় পাবেন না। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি। তার মানে কী? তার মানে তারা ভয় পেয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা ছোট্ট একটা কর্মসূচি দিয়েছিলাম ঢাকার প্রবেশ পথে অবস্থান। তারা এমন ভয় পেলো, পুলিশ বাহিনী, দলীয় গুন্ডা বাহিনী নিয়ে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করে ফেললো। একজন মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষসহ সারাবিশ্ব তা দেখেছে। তারপর আবার নাটক করে গল্প সাজিয়েছে। এতে কি গয়েশ্বর বাবু ছোট হয়েছে? না ছোট হয়েছে সরকারের লোকজন। তাদের পায়ের তলে মাটি নেই। এজন্য তারা এমন নাটক করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের দেশে বিদেশে কোনো সমর্থন নেই। দুই বার চুরি করে, মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। এখন আবার বলে তাদের অধীনে নির্বাচন হবে। এবার আর তা হবে না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। ফখরুল বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। তবে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন চাই না। আমরা জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছি। সেই ঐক্য হচ্ছে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন দিতে হবে। এখনও সময় আছে, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। দেশের মানুষের চাহিদাকে পূরণ করুন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, গ্রেফতার করছেন ভালো কথা। আরো করেন। কিন্তু আন্দোলন কি থামতে পারবেন? এদেশের সিনিয়র সিটিজেনশিপ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তাই ফেলে পেটালেন, আবার আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গেলেন, নাটকও করে ছেড়ে দিলেন। এদেশের মানুষ এই সরকারের পতন কামনা করে। আমাদের একটাই দাবি আপনাদের পদত্যাগ। এছাড়া আমরা অন্য কিছু চাই না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, এ সরকার ১৮ কোটি মানুষের টুটি চেপে ধরেছে। এদের কাছ থেকে টুটি ছেড়ে আনতে হবে। এরা গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। যার জন্য ৫২ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ করছিল এদেশের মানুষ। বর্তমান সরকার লগি বৈঠার সরকার। এরা মানুষের ওপর জুলুম করে শেষ করে দিয়েছে। যা গত ২৯ জুলাই তারা দেখিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর কিভাবে জুলুম হয়েছে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানকে নাকি পুলিশ মানবিকতা দেখিয়েছে। পেপারে ও টিভিতে খবর হয়েছে। এগুলো নাটক করেছে সরকার। নাটক না হলে তারা কেন মিডিয়া দেবে এগুলো। শুধু কেন এই দুই নেতার সেবা-খাবার দিতে হয়। আরো তো অনেক নেতা গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকে তো ছেড়ে দেয়নি। খোঁজ নেয়নি প্রধানমন্ত্রী। এসব নাটক করে পার পাওয়া যাবে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিজয়ী হয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াও বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার আমরাও বিজয়ী হবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে এটি আদালতের সিদ্ধান্ত নয়। বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে তা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সিদ্ধান্ত নয়। বাংলাদেশের নেতৃত্বে কে দেবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবে এই দেশের জনগণ। সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন বর্তমান সরকার একটি এক দলীয় সরকার। তারা দেশে অলিখিত বাকশাল কায়েক করেছে। তারা যা খুশি তাই করছে। গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়েছে। এই সরকার হলো ধোঁকাবাজির সরকার। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে স্বৈরাচার কায়েম করেছে। মির্জা আব্বাস বলেন, যতোই চেষ্টা করা হোক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। যতোই গ্রেপ্তার করা হোক সরকার পতনের আন্দোলন আর ঠেকানো যাবে না। এ দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে। এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেতা তারেক রহমান। এরা আর কতদিন গ্রেফতার ও আটক করবে। এবারের আন্দোলনে কেউ টিকতে পারবে না। পতন এদের হবেই। এদেশের মানুষের আন্দোলন করার সাংবিধানিক অধিকার। তারা তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন করবেই।
জনসমাবেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বরকত উল্লাহ বুলু, আমান উল্লাহ আমান, অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ফারুক, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ। সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা বক্তব্য রাখেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com