কংগ্রেস সদস্যরা জানতে চেয়েছেন
বাংলাদেশে সফররত মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের সমঝোতার পথ আছে কি না, সেটাও জানতে চেয়েছেন তাঁরা।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও রিচার্ড ম্যাকরমিক গতকাল রোববার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সভার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আলোচনার বিষয়ে জানান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ চীনের খপ্পরে পড়েছে কি না, তা–ও মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য জানতে চেয়েছেন।
রাজনৈতিক সমঝোতা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তারা (কংগ্রেস সদস্য) বলেছে, তোমাদের কোনো সমঝোতার পথ আছে কি না ওদের (বিএনপি) সঙ্গে। আমরা বলেছি, তাদের যে দাবি, সরকারের পদত্যাগ, ওটাতে সমঝোতার কোনো স্কোপ নেই।’
মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের কাছে তাদের দেশে নির্বাচন উপলক্ষে সরকারের পতন হয় কি না, সে প্রশ্ন রেখেছেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় তোমাদের দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) কি সরকারের পতন হয়? নিশ্চয়ই না। এমন দাবি থাকলে তোমরা কি আলোচনায় বসবে? ওগুলোর প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা আমাদের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন করব।’ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিকতা থাকলে সুষ্ঠু ও সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, যতগুলো দল আছে সব দল যদি নির্বাচনে যোগদান করে, তারা যদি আন্তরিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়, অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন চায়, তাহলে নির্বাচন সহিংসতা ছাড়া হবে। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন হবে।
সরকার বা নির্বাচন কমিশন চাইলে সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনের বিষয়ে ‘গ্যারান্টি’ দেওয়া যায় না বলে উল্লেখ করেন আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘তাদের (দুই কংগ্রেস সদস্য) কাছে বিভিন্ন লোকজন বলেছে, বাংলাদেশ একটি ভয়ংকর জায়গা। এরা চীনের খপ্পরে পড়ে গেছে। চীনের গোলাম হয়ে গেছে। এখানে অশান্তি আর অশান্তি। পুলিশ সব লোকজনকে ধরে মেরে ফেলছে। এই ধরনের একটি ধারণায় ভয় তাদের। তবে এসব কোনোটিই সত্য নয়।’
নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে, এ বিষয়ে কংগ্রেস সদস্যরা আশ্বস্ত হয়েছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সেটি তাদের জিজ্ঞেস করুন।’ দুই কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কংগ্রেস সদস্যরা রোহিঙ্গাদের কাজ দেওয়ার জন্য বলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আমাদের ঘনবসতি। আর আমাদেরই প্রতিবছর ২০ লাখ যুবক কাজের বাজারে যোগ হয়। তোমরা মাত্র ৬২ জন রোহিঙ্গা নিয়েছ। পারলে আরও রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাও।’