মুমিনের পুরোটা জীবন রবের নিয়ামতে ভরপুর। নিয়ামতরাজির অন্যতম হচ্ছে ঘুম। ঘুম আছে বলেই মুমিন ইবাদতে মগ্ন থাকে দ্বিগুণ গতিতে। ইবাদত করতে করতে যখন ক্লান্তি চলে আসে, ঘুমই তখন দূর করে দেয় সমূহ ক্লান্তি-অবসাদ। উদ্যমতা ফিরে পেতে ঘুমের বিকল্প নেই। সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ঘুম অপরিহার্য।
আল্লাহ ঘুমকে তার অনুগ্রহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ‘আর আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী’ (সূরা নাবা-৯)। ঘুমের আগে মুমিন যদি সুন্নতের প্রতি খেয়াল রেখে ঘুমায়, তার ঘুমও তখন ইবাদতে পরিণত হবে। কেননা মুমিন তার সব কাজে রাসূল সা:-এর অনুসরণ করবে এটিই স্বাভাবিক।
তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া : রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত ইবাদতে কাটাল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল, সে যেন পুরো রাত ইবাদতে কাটাল’ (মুসলিম-১৪৯২)।
অজু করা : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন নামাজের অজুর মতো অজু করে নাও’(বুখারি-২৪৭)।
আগুন নিভিয়ে দেয়া : মহানবী সা: বলেন, ‘তামরা যখন ঘুমাতে যাবে ঘরে আগুন জ্বেলে রাখবে না’ (মুসলিম-২০১৫)।
খাবারের পাত্র ঢেকে রাখা : নবীজী সা: বলেন, ‘তোমরা রাতে বাসনগুলো ঢেকে রাখবে, মশকগুলোর মুখ আটকে রাখবে’ (মুসলিম-৫১৫০)।
ঘর-বাড়ির দরজা বন্ধ করা : নবীজী সা: বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে দরজা বন্ধ করবে। কেননা, শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না’ (বুখারি-৩৩০৪)।
বিছানা ঝাড়া : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ বিছানায় শয্যা গ্রহণ করতে যায়, সে যেন তার চাদরের ভেতর দিক দিয়ে নিজ বিছানা ঝেড়ে নেয়’ (বুখারি-৬৩২০)।
ডান কাত হয়ে শোয়া : রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যখন তুমি শোয়ার বিছানায় যেতে চাও তখন তুমি নামাজের অজুর মতো অজু করো এর পর ডান কাত হয়ে শুয়ে পড়ো’ (বুখারি-৭৪৮৮)।
দোয়া পড়া : রাসূলুল্লাহ সা: ঘুমের আগে ও পরে মাসনুন দোয়া পড়তেন (বুখারি-৬৩১৪)।
ঘুম ছাড়া যখন চলাই যায় না, ঘুমটা তাই এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে করে ঘুমও হয়ে গেল, সাথে সাথে সওয়াবও অর্জন হলো। লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া ফয়জিয়া, ডেমরা, ঢাকা