বিদেশীরা অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাথা ঘামায় কেন- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ওবায়দুল কাদেরকে পূর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এই বিএনপি-নেতা বলেছেন, আপনাদের সেই কথা মনে নেই? আপনারা দফায় দফায় বিদেশীদের সাথে দেখা করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য বলেছিলেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সরকার পতনের একদফা দাবিতে কালো পতাকা মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশে গুম খুনের বিরুদ্ধে সোচ্চার বিদেশীদের ধন্যবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, বাংলাদেশে গুম খুন হত্যা, একের পর এক মানবাধিকার হরণের যে পালা তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা, তার বিরুদ্ধে বিদেশীরা যারা সোচ্চার, গণতন্ত্রকামী যে দেশগুলো সোচ্চার। আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের এই সমর্থনে গণতান্ত্রকামী জনগণ উৎসাহিত হবে।
তিনি বলেন, আজ কেন শেখ হাসিনার পদত্যাগ জরুরি, আজ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার এজন্য জরুরি যে দেশের মানুষ যদি ভোট দিতে চায় তাহলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে ভোট দিতে পারবে না। বাংলাদেশ থেকে নীতি-নৈতিকতা, সত্য কথা, সত্যবাদিতা সব তুলে নিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশকে গুম খুন অপহরণের রাজ্যে পরিণত করেছেন তিনি।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে বিদেশীদের এত মাথাব্যথা কেন। ১৯৯১ সালে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে প্রতিটি দূতাবাসে ও দাতা সংস্থাকে চিঠি দিয়েছিলেন- দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য। ১৯৯১ সালের নভেম্বর মাসে দৈনিক ইনকিলাবের হেডলাইনসহ এসেছে- শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য। ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল বিএনপি সরকার, সেই সময় ৫০ জন কূটনীতিকের কাছে ৫৫ দফা দাবি দিয়েছিলেন কে? ‘এই আওয়ামী লীগ, এই মিথ্যাবাদী সরকার এদেশে হস্তক্ষেপ করার জন্য বলেছিলেন। আর আজকে বলেন- বিদেশীরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাথা ঘামায় কেন। আপনাদের সেই কথা মনে নেই? আপনারা দফায় দফায় দেখা করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য বলেছিলেন।’ যোগ করেন রিজভী। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার আজ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম, খুন হত্যা করছেন। ইলিয়াস আলী নাই, চৌধুরী আলম নেই। তানভীর রবিনকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ, গোয়েন্দা বাহিনী হানা দিচ্ছে। আজ ভয়ের বাংলাদেশ, আতঙ্কের বাংলাদেশ। আর এটার জন্য দায়ী একমাত্র সরকার প্রধান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মাদ শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।