নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। তিনি বলেন, আজ দেশের জনগণ পরিবর্তন চায়। এ সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। অথচ অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে থাকা এই জুলুমবাজ সরকার তা হতে দিতে চায় না। তারা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নাটক ম স্থ করে জনগণের আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু জনগণ এবার তা আর হতে দেবে না। তীব্র গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে ইনশাআল্লাহ। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় বাধা, কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, নেতাদের মুক্তি ও সারাদেশে নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মাওলানা আবু সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি তাকরিম হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা কলেজ সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন থানা আমির-সেক্রেটারি প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজার থেকে শুরু হয়ে আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার এ দেশের মানুষের নাগরিক অধিকার হরণ করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনা এটা শুধু জামায়াতের দাবি নয়, এটা আজ গোটা বাংলাদেশের জনগণের দাবি। ফলে নিজেদের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের জনগণ রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে।
তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি আরো বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজা ঢাকায় করতে না দেয়া এবং সারাদেশে তার গায়েবানা জানাজায় বাধা প্রদান, গণগ্রেফতার, গুলিবর্ষণ ও হত্যার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে ঘৃণ্য, বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, আমরা পরিস্কারভাবে বলে দিতে চাই যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ও পেশী শক্তি দিয়ে এ দেশ থেকে নিঃশেষ করা যাবে না। বরং জামায়াত আরো বেশি শক্তি নিয়ে জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়বে। সরকার জামায়াত নেতাদের গ্রেফতার করে জনগণের এই আন্দোলন বন্ধ করতে চায়। আমরা অবিলম্বে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির আ ন ম শামসুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, সেলিম উদ্দিনসহ কারাবন্দি সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজপথের আন্দোলনে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে সকল নেতাকর্মীকে মুক্ত করা হবে ইনশাআল্লাহ। মিছিল শেষে সমাবেশে অতর্কিত হামলা, গুলিবর্ষণ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকা থেকে অসংখ্য নেতাকর্মীদের আটক করে তারা। এ ঘটনার তাৎক্ষণিক তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।