বাজার স্থিতিশীল রাখতে আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতি কেজি আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা এবং প্রতি পিস ফার্মের ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এরপর দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বাজারে এখনো এ তিনটি নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর হয়নি। গতকাল শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরের একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়েও হালিপ্রতি চার টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে ডিম। একই ভাবে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে আলু ও দেশি পেঁয়াজ। এদিন মুসলিম বাজারের মায়ের দোয়া স্টোরে প্রতি হালি ডিম ৫২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সে হিসাবে প্রতি পিসের দাম ১৩ টাকা। অন্য দোকানগুলোতেও দাম একই। মায়ের দোয়া স্টোরের বিক্রয়কর্মী আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, ডিম আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে সেটা কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ পাইকারিতে ডিমের দাম নির্ধারিত নয়। বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৮৫-৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে আকারে কিছুটা বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকায়। আর বাজারে ৫০ টাকার কমে কোনো আলু মিলছে না। কোনো ক্রেতা একসঙ্গে পাঁচ কেজির বেশি আলু কিনলে কেজিতে ২-৩ টাকা কম পাচ্ছেন।
মিরপুরের মারাজানা স্টোরের বিক্রেতা সোহাগ বলেন, আলু-পেঁয়াজ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে খুচরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, এখন পর্যন্ত একদিনও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। উল্টো এসময়ে দাম আরও বেড়েছে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বাজার মনিটরিং করছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। অথচ পাইকারিতেই দাম কমেনি। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করলে তো খুচরা ব্যবসায়ীদের লোকসানে পড়তে হবে। খুচরা বিক্রেতারা কেজিতে ২-৩ টাকা লাভ পাচ্ছেন। কিন্তু পাইকারিতে প্রতি মুহূর্তে দাম ওঠানামা করছে।
মুসলিম বাজারের ভ্যানে আড়াই কেজি আলু ১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। অর্থাৎ প্রতি কেজি ৪০ টাকা। যদিও এ দাম সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেশি। আকারে ছোট এসব আলুর দাম প্রসঙ্গে বিক্রেতা রাইজুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, আকারে ছোট হলেও আলুর মান ভালো। প্রতি কেজি আলুতে ২-৩ টাকা লাভ হচ্ছে। দাম কিছুটা কম হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে বেশি।