বাগেরহাটের ফকিরহাটে অনাবাদি ও জলাবদ্ধ জমিতে ডালি পদ্ধতিতে সবজি চাষে সাড়া জাগিয়েছে কৃষি বিভাগ। পতিত ও জলাবদ্ধতা জমি পরিষ্কার করে পানির ওপর ডালি স্থাপন করে চাষাবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের সবজি। উপজেলা কৃষি বিভাগের এই নতুন উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এলাকার অনেক কৃষক। উপজেলা কৃষি বিভাগ জানান, ভাসমান প্রকল্পের সমন্বিত কৃষির আওতায় ডালি পদ্ধতিতে সবজি চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ফকিরহাটের অর্গানিক বেতাগা ও পিলজংগ এলাকায় প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ঘের, পুকুর ও জলবদ্ধতা জমিতে ঝুলন্ত ডালিতে সবজি চাষ শুরু করা হয়েছে। এখানে লাউ ও শসা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি অফিস থেকে এসব কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। অর্গানিক বেতাগা ও পিলজংগ ব্লকের কৃষক মো. অহিদ শেখ, দেবাশিষ দাম, মো. রফিকুল ইসলাম, পারভীন বেগম অঞ্জু রানী দেবনাথসহ অনেক কৃষক বলেন, প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে পুকুর ও ঘেরে ঝুলন্ত ডালিতে সবজি চাষ শুরু করেন। মৎস্য চাষের পাশাপাশি তারা সবজি চাষ করছেন। ভাসমান প্রকল্পের সমন্বিত কৃষি বিভাগের আওতায় উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় এই সবজি চাষ করে লাভবান হবেন বলে তারা জানান। বিভিন্ন ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মন্ডল, সোলাইমান আলী মন্ডল ও তানিয়া রহমান জানান, মাছের চাষের পাশাপাশি ঘেরে ও পুকুরের পানির ওপর বাঁশের খুঁটির সঙ্গে ঝুলানো হয়েছে বাঁশ, নেট ও পলিথিন দিয়ে তৈরি ডালি। এখানে কৃষকরা বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন। অনাবাদি জমিতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সবজি ও ফসল ফলাতে পারেন তাহলে তারা লাভবান হতে পারবেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে এসব কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি নানাভাবে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রযুক্তিগত সহায়তার পাশাপাশি তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা থাকবে না-প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর ফকিরহাটে কৃষি বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে পতিত ও জলাবদ্ধতা জমি চাষের আওতায় আনতে কাজ শুরু করা হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে ফকিরহাট উপজেলার অনেক নিচু এলাকায় কৃষকরা এক সময় আবাদ করতে পারতেন না কৃষকরা। ফলে অনেক জমি পতিত হিসেবে পড়ে থাকতো। এখন সেইসব জলবদ্ধতা জমিতে ভাসমান বেড়ে ও ঝুলন্ত ডালিতে সবজি চাষ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই প্রদ্ধতিতে সবজি চাষে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ঘের, পুকুর ও জলবদ্ধতা জমিতে আমরা সবজি চাষে সফল হয়েছি। ইতিমধ্যে জলাবদ্ধ পতিত জমিতে এভাবে ডালি পদ্ধতি, গোড়া পদ্ধতি ও ভাসমান বেড়ে সবজি উৎপাদন করে এই অঞ্চলের কৃষকরা লাভবান হবেন এমনটি প্রত্যাশা করেন তিনি। সবজি উৎপাদনে কৃষকদের সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে।