রবিবার, ০২ মার্চ ২০২৫, ০৫:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
প্রশাসন তুমি কার? ধর্ষক না ধর্ষিতার! স্লোগানে উত্তাল সীতাকুন্ড জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশে বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তক-ডাসারে শাহজাদা মিয়া ঢাকাস্থ মঠবাড়িয়া ছাত্র কল্যাণ সমিতির কমিটি গঠন রমজানকে স্বাগত জানিয়ে দুর্গম সুরের আসরের পক্ষ থেকে ইসলামী সংগীত পরিবেশন গলাচিপা যুবদলের নেতৃত্বে, পবিত্র মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় শুভেচ্ছা মিছিল শ্রীমঙ্গলে স্কুল ও মাদ্রাসার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ফটিকছড়িতে স্বৈরাচারের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জামায়াত নেতাদের নওগাঁয় রাকিবুলের মাছের সিঙ্গারা : মাসে আয় লাখ টাকা পাঁচবিবিতে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে মাহে রমজান উপলক্ষে নগদ অর্থ প্রদান ধর্ষণের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

ঈশ্বরগঞ্জে দুর্যোগ সময়েও আগাম জাতের আমনে কৃষকের স্বস্তি

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৩

আশ্বিন-কার্তিক মাসকে বলা হয় অভাবের মাস। তার সাথে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো টানা বৃষ্টিতে। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে গত ৫০ বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টিপাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষি খাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে আগাম জাতের আমন ধান চাষ করে স্বস্তি মিলেছে কৃষকের। তাদের দাবি, আগে আশ্বিন-কার্তিকে কৃষকদের বেশ অভাবে দিন কাটাতে হতো। এখন সেই অভাব ঘোচাতে আশার আলো তৈরি করছে আগাম জাতের ব্রি ধান-৭১, ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৮৭, বিনা-১১, বিনা-১৭, বিনা-২০, বিনা-২২ ধানের আবাদ। আগাম জাতের এসব ধানের ফলনও বেশ আশানুরূপ বলে জানায় কৃষি বিভাগ। ফলে প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের এসব জাতে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, গত মধ্য জুনে বোরো কাটা ও মাড়াই শেষ হওয়ায় আমন লাগানো শুরু হয় মধ্য জুলাই থেকেই। এ কারণে ধানি জমিতে কৃষকরা আগে আলু, সরিষা ও শস্য চাষ করার সময় পেতো না। কিন্তু এখন আগাম জাতের ধান চাষ করে সেই জমিতে অনায়াসেই সরিষা, আলু বা শস্যের চাষ করার পরও বোরো ধান লাগাতে পারছে। এ বছর উপজেলায় আমন ধানের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১৯ হাজার ২শত ৯৫ হেক্টর। কিন্তু ১৯ হাজার ৩’শত ১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করে লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এতে আগাম জাতের ধানের চাষ হয়েছে ২৫৫৫ হেক্টর জমিতে। আগাম জাতের ধান হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ টন। স্থানীয় একাধিক কৃষক জানায়, আগে জমিতে বছরে দুবার বোরো ও আমন ধানের চাষ হতো। এর মধ্যে ওই ধানি জমিতে অন্য ফসল চাষ করার তেমন সুযোগ ছিলো না। ফলে এ এলাকার চাষি ও কৃষি শ্রমিকদের পড়তে হতো অর্থ সংকটে। আশ্বিন-কার্তিকে অভাবে দিন কাটাতে হতো। এখন সেই অভাব দূর করে দিয়েছে আগাম জাতের হাইব্রিড ধান। উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের চর পুম্বাইল গ্রামের কৃষক রিয়াজুর রহমান বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকেই ধান চাষ করছি। আমন ধান কাটার উপযোগী হতে প্রায় পাঁচ মাস সময় লাগে। এই সময়ে আমাদের এলাকার জমিতে অন্য কোনো ফসল চাষ করা সম্ভব হয় না। এবার ৫০ শতাংশ জমিতে ব্রি-৭৫ জাতের ধান লাগিয়ে ভালো ফলন পেয়েছি। একই গ্রামের আরেক কৃষক জুয়েল মিয়া বলেন, বছরে দুবার ধান চাষ করতে এক ফসল বিক্রি করে আরেক ফসলের জন্য খরচ জোগাতে হতো। এর সঙ্গে অতিবৃষ্টি, পোকামাকড় ও অনাবৃষ্টির কারণে আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে উৎপাদন কম তো। কোনো বছর ফসল তো দূরের কথা ক্ষেতের খড়ও বাড়িতে আনাতে কষ্ট হতো। তবে ব্রি-৭৫ জাতের ধান লাগিয়ে সেই দুর্দিনের অবসান হয়েছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর হোসেনপুর গ্রামের কৃষক ফয়েজ উদ্দিন বলেন, আমি ১২০ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৮৭ লাগিয়েছি। ওই ধান কয়েকদিনের মধ্যে কেটে বাড়িতে আনবো। এই ধান আবাদে সার-পানি-কীটনাশক কম লাগছে। রোগবালাই নেই বললেই চলে, আবার ফলনও ভালো হয়েছে। উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন, আগাম জাতের ধান কৃষকরা ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে ঘরে তুলতে পারছে। আমনের অন্য জাতগুলোর তুলনায় ৩০ থেকে ৪০ দিন আগে এ ধান পেকে যায়। তাই এ জাতগুলোর ধান চাষে কৃষকদের আগ্রহও বাড়ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, আগে কৃষকরা বছরে দুটির বেশি ফসল ফলাতে পারতো না। এখন ধানি জমিতে কৃষকরা বছরে তিনবার ফসল ঘরে তুলতে পারছে। আগাম জাতের ধান চাষ, কাটা ও মাড়াইয়ের পরে একই জমিতে আলু, সরিষা, মূলা ও অন্যান্য শস্য চাষের সুযোগ হয়েছে। এতে ফসলের নিবিড়তা যেমন বাড়বে, মাটির স্বাস্থ্য বৃদ্ধি পাবে, তেল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। যেকারণে এ অঞ্চলের কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com