ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম ইউনিয়নের সিংগী বাজারের দক্ষিণ পাশের খোলা জায়গায় অনেক মানুষের জটলা। ভিড় ঠেলে সামনে এগোতেই চোখে পড়ল সুঠাম দেহের মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি কয়েকটি শিকের মাথায় আগুন জ্বালিয়ে তা কৌশলে মুখের মধ্যে ঢোকাচ্ছেন এবং বের করছেন।কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো আগুনে তার মুখ পুড়ছে না। কিছুক্ষণ পর ওই একই ব্যক্তিকে বৈদ্যুতিক কাচের টিউবলাইট মুখে ভরে চিবিয়ে খেতেও দেখা যায়। কিন্তু কাচের টিউব চিবিয়ে খেলেও তার মুখ কেটের রক্ত বেরোচ্ছে না। আশ্চর্যজনক এই খেলা উৎসুক জনতা তার চারপাশ গোল হয়ে দাঁড়িয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখছেন। এভাবেই হাট-বাজারে প্রতিনিয়ত মজমা বা লোক জমায়েত করে এই ব্যক্তি কখনো খাচ্ছেন আগুনে পোড়া তপ্ত মোমবাতি, কখনো খাচ্ছেন কেরোসিন তেলের জলন্ত আগুন, আবার কখনো চিবিয়ে খাচ্ছেন কাঁচ। শুনতে বা দেখতে অদ্ভুত ও অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই করেন সেলিম সরকার নামের এক ব্যক্তি। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে খেলা দেখানোর জন্য এক বাজার থেকে অন্য বাজারে ছুটে চলেছেন তিনি। জীবিকার তাগিদে বেছে নিয়েছেন আগুন খাওয়া, তপ্ত মোমবাতি খাওয়া আবার কখনো কাঁচ খাওয়ার মত ভয়ংকর সব খেলা। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার ঢাকালে পাড়ার বাসিন্দা সেলিম সরকার একটি বাইসাইকেলে চড়ে ভয়ংকর এসব খেলা দেখিয়ে বেড়ান উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে।দর্শক আকৃষ্ট করতে কখনো জলন্ত মোমবাতি নিজ জিহ্বায় নেন আবার এ মোমবাতিই কখনো আবার খেয়ে ফেলেন আবার কখনো চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন কাঁচ। খেলা দেখিয়ে দশর্করা খুশি হয়ে যে অর্থ দেন তা দিয়েই সংসার চালান তিনি। সিঙ্গী বাজারের সেলিম সরকারের দেখানো খেলা দেখে মুগ্ধ দর্শক মঞ্জুরুল করিম বলেন, এরকম আশ্চর্যজনক খেলা আমি আমার জীবনে কখনো দেখিনি। নিজেকে বিশ্বাস করাতে কষ্ট হচ্ছে যে, আগুন ও কাচ মুখে দিয়েও তার মুখের কিছু হচ্ছে না। তার খেলা দেখে এখানে উপস্থিত সবাই আমার মত অবাক হয়েছেন। সকলেই কম বেশি তাকে খেলা দেখানোর জন্য টাকাও দিয়েছেন। আশ্চর্যজনক খেলা দেখানো সেলিম সরকার এই প্রতিবেদককে জানান, আমি ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন হাট বাজারে এভাবে খেলা দেখায়। আমার খেলা দেখে দর্শকরা খুশি হয়ে যা দেই তাতে আমার সংসার চলে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হলেও বউ বাচ্চা নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য এই পেশা আমাকে অনেকটা বাধ্য হয়েই বেছে নিতে হয়েছে।