হেমন্তে শুধু নবান্নই নয়, গ্রাম-বাংলার আরও একটি ঐতিহ্য নদীতে পলোই দিয়ে মাছ শিকার যাকে বলে বাহৈত উৎসব। এতে অংশ নেন কয়েক গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মাছ শিকারি। এ উৎসব প্রতি বছরই নজর কাড়ে ভোগাই নদীর দুই তীরের মানুষের। কারও কাঁধে পলো, কারও হাতে ঠেলা জাল কারো হাতে বিছান জাল। মাছ ধরার আরও নানা রকম সরঞ্জাম রয়েছে অন্যদের হাতে। চলছে অগ্রহায়ণ মাস। নদ-নদীর পানি কমে প্রায় তলানিতে নেমে গেছে। এলাকাবাসী মিলে আজ নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদীতে মেতেছে মাছ শিকারিদের বাহৈত উৎসবে। তবে যারা ভোগাই নদীতে মাছ শিকারে আসে তাদের কেউই পেশাদার শিকারি না। সকলেই শখের বশে মাছ শিকার করেন। শেরপুরে মাছ ধরার এ উৎসব ‘বাহৈত’ নামে পরিচিত। নালিতাবাড়ী উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া পাহাড়ি নদী ভোগাইয়ে এমনই হল্লা করে বাহৈত উৎসবে মেতে ওঠেন দুই শতাধিক মানুষ। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর হেমন্তে ভোগাইসহ আশপাশের নদনদী ও খালবিলে শখের বশে মাছ শিকারে নামেন তারা। সবাই মিলে খেয়া জাল, বিছানো জাল ও পলো নিয়ে একযোগে হৈ-হুল্লোড় করে মাছ শিকারে অংশ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভোগাই নদীতে মাছ শিকারে নামেন তারা। নদীর প্রায় দুই কিলোমিটার ভাটি এলাকা পর্যন্ত চলে বাহৈত উৎসব। কথা হয় বাহৈত উৎসবে অংশ নেওয়া সাদিকুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তাদের ভাষ্য, তারা মূলত কৃষি কাজে জড়িত। কিন্তু মাছ শিকার তাদের নেশা। এ নেশা থেকেই স্থানীয়দের সঙ্গে এসেছেন পলো দিয়ে মাছ ধরতে। দেড় ঘণ্টায় প্রায় দুই কিলোমিটার নদীপথে তাদের পলোতে একটিও মাছ আটকায়নি। তাতে কোনো আফসোস নেই তাদের। কয়েকজন ছোট ও মাঝারি আকারের দু-একটি আইড় মাছ পেলেও আনন্দের কমতি ছিল না। যুগ যুগ ধরে এ উৎসব করে আসছেন স্থানীয়রা।