লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, ৭ই জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে আমরা ৯৫ শতাংশ সফল হয়েছি। জনগণ সচেতন হয়েছে, দেশের ভালমন্দ পার্থক্য করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। যুব সমাজ এতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তোমাদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ও শুভেচ্ছা। এদেশকে তোমাদের সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর মগবাজারের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এলডিপি উদ্যোগে নির্বাচন পরবর্তী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। অলি আহমদ বলেন, ভোট চোর, দুর্নীতিবাজ, টাকা পাচারকারী, কৃত্রিমভাবে নিত্যপণ্যের মূলবৃদ্ধিকারী, গণতন্ত্র ধ্বংসকারী এবং জনগণকে ন্যায় বিচার থেকে বি তকারীদের উপর গজব নেমে এসেছে। জনগণ তাদের দাঁতভাঙ্গা উচিত জবাব দিয়েছে। সরকারের প্রতি জনগণ অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। জনগণ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণ এই পাতানো এবং ভাগাভাগির নির্বাচন বর্জন করেছে। জনগণ তাদেরকে খোলা মাঠে নেংটা করে দিয়েছে।
ইনশাআল্লাহ অচিরেই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর ৭ই জানুয়ারির নির্বাচনকে কেউ কেউ নর্থ কোরিয়ার মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
নির্বাচেন আগের দেশের একসপ্তাহের তথ্য চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, এসময়ে সরকার দলীয় আসল এবং তাদের ডামি প্রার্থীরা ঘরে ঘরে টাকা বিতরণ করেছে, ভোটারদের উপর তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি, আগুন সন্ত্রাস, ককটেল বিস্ফোরণ, জ্বালাও পোড়াও, হানাহানি এবং মারামারির মাধ্যমে জনজীবনকে দূর্বিসহ করে তুলেছে, প্রনোদনার নামে বিভিন্ন পদবির কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে সরকারের আসল এবং ডামি প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক কার্যকালাপে লিপ্ত ছিলো এবং কয়েকজন মারাও গেছে, গোপন কক্ষে জাল ভোট দেয়ার বিশেষ ব্যবস্থা ছিলো, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ৬০ শতাংশ ভোট প্রদান নিশ্চিত করার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো, রেজাল্টসিট আগে থেকেই দস্তখত করা হয় এবং ভোটের রেজাল্ট আগেই ঠিক করে দেয়া হয়েছিলো।
নির্বাচনের দিনের তথ্য তুলে ধরে কর্নেল অলি বলেন, অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিলো, কোন কোন কেন্দ্রে কেউ ভোট দিতে যায় নাই, কোন কোন কেন্দ্রে শুধু কুকুর ও বানর খেলাধুলা করছে এবং ছোট ছোট শিশুরা ভোট কস্টিং করেছে, হঠাৎ নির্বাচন সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সিইসি বললেন ২৭ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে, পাশ থেকে সচিব বললো না স্যার ৪০ শতাংশ হয়েছে, শতকরা প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট কেন্দ্রে একাধিক নির্বাচনি এজেন্ট ছিলো প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে, বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমরা নিশ্চিত গড়ে ৭ থেকে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে। সরকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ক্ষমতা ছাড়ার পন্থা বের করুন। হাতে সময় খুব বেশি নাই। যতই লাফালাফি করেন না কেন লাভ নাই, বাস্তব ভিন্ন, জনরোষে পড়তে পারেন। কারণ নিত্যপণ্যের মূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, পাঠ্যপুস্তক গুলিতে ইসলাম ধর্ম বিরোধী বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সুচিকিৎসা নাই বললেই চলে, রপ্তানি আমদানি ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ এখন বাজারে নাই। তার উপর ২০টি ব্যাংক প্রায় দেউলিয়া, সীমাহীন দুর্নীতি ও টাকা পাচার চলছে, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সংকট ক্রমাগত বাড়ছে এবং ডলার সংকট, বিদেশি ঋণ পরিশোধ করার সক্ষমতা নাই।