মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতি নিয়ে কী কারণে বিতর্ক তৈরি করতে চায় : প্রশ্ন রিজভীর

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪

সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতি সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয় নিয়ে কী কারণে বিতর্ক তৈরি করতে চায় প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ অর্থাৎ বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় সংস্কৃতি বিশ্বাসের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন প্রশ্ন রাখেন।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। দেশে ৯০ ভাগের বেশি মুসলমান। সুতরাং, আমরা দেখে আসছি, রমজান মাসজুড়ে সাধারণত সারাদেশের সকল স্কুল কলেজ কিংবা মাদরাসা- সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতো। অথচ, এবার ব্যতিক্রম। সরকার রমজানের অর্ধেক মাস দেশের সকল স্কুল কলেজ মাদরাসা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রতি মুসলমানের কাছেই রমজান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র রমজান মাসে মানুষ একটু শান্তি এবং স্বস্তিকর পরিবেশে রোজা রাখবে, সেহরি করবে, ইফতার করবে, এবাদত বন্দেগি করবে, প্রত্যেকটি মানুষেরই এমন আশা-আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু গণবিরোধী অগণতান্ত্রিক সিন্ডিকেটবাজ সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা গভীর হতাশায় নিমজ্জিত থাকবে- এটাই স্বাভাবিক। যারা দেড় দশক ধরে বিনা ভোটের ডামি সরকার হয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রেখেছে তাদের প্রথম এবং প্রধান শত্রু হচ্ছে গণতন্ত্রকামী জনগণ। তারা জনগণের জন্য সুন্দর পরিবেশ পরিস্থিতি নিশ্চিত করা দূরে থাক বরং জনগণের রক্ত নিংড়িয়ে নিতেই সদা তৎপর। দেশের আপামর জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সংস্কৃতি নিয়ে ঠাট্টা মস্করা করতেও এদের বিবেকে বাধে না।
তিনি বলেন, সরকার গতকাল নি¤œমানের পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে রোজাদারদের উপহাস করেছে। রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ায় ধর্মীয় অনুভুতি কাজ করে। অথচ ডামি সরকারের একজন ডামি মন্ত্রী ইফতার নিয়ে কতই না উপদেশ দিচ্ছেন জনগণকে। যেহেতু এরা অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি বা মন্ত্রী হননি, এই কারণে তারা ‘বিগ ব্রাদার’ হয়ে রোজাদার মানুষদের নিয়ে মশকরা করছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, পবিত্র রমজান মাসের খেজুর আমদানির জন্য ভতুর্কি দূরে থাক, উল্টো খেজুরকে বিলাসী পণ্য উল্লেখ করে খেজুর আমদানির ওপর শুল্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বিনাভোটের ‘ডামি সরকার’। খেজুরের ওপর ভর্তুকি না দিলেও ‘ডামি সরকার’ শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংককে। আওয়ামী লুটেরা চক্র ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া বানিয়ে দিয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংক হেলথ ইনডেক্স অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে নয়টি ব্যাংকে জ্বলছে লাল বাতি, আরো ১২টির অবস্থা খুব খারাপ। সব মিলিয়ে ৩৮টি ব্যাংকে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে ‘ডামি সরকার’ এইসব ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। ঋণ খেলাপি, লুটেরা, টাকা পাচারকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে ভর্তুকি দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতার করার জন্য খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি দিচ্ছেন না। খেজুর আমদানির ওপর ভর্তুকি না দিয়ে উল্টো বেশি করে শুল্ক আরোপ কোনো সাধারণ অপরাধ নয়, রীতিমতো মহাপাপ।
তিনি বলেন, শুধু খেজুর নয়, সরকারের সিন্ডিকেটবান্ধব লুটপাটের নীতি ও চরম ব্যর্থতায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। বাজারে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, চিনি, আটা, ময়দা, ছোলা, বেসন, লেবু, শসা, মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম মানুষের আয় থেকে দুস্তর ব্যবধান। দুর্নীতিবাজ ‘ডামি সরকার’ বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এই কারণে যে সিন্ডিকেটবাজরা সকলেই সরকারের আশ্রিত লোক। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে হাজার হাজার মাইল দুরে কোথায় কোন দেশে যুদ্ধ হচ্ছে দুর্নীতিবাজ ‘ডামি সরকার’ সেইসব অজুহাত তুলছে। প্রতিদিন দাম বাড়ার নানান ধরনের উদ্ভট কারণ আবিস্কারে ব্যস্ত সরকার।
তিনি আরো বলেন, সারাবিশ্বে দাম কমলেও বাংলাদেশে প্রতিদিন কেবল বাড়াচ্ছে জনগণের ‘পকেট কাটা সরকার’। বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়া-কমার সাথে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই। দেশে জিনিসপত্র দাম বাড়া-কমার সাথে সম্পর্ক আওয়ামী লুটেরাদের সঙ্গে। আওয়ামী লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দমন করা না গেলে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে না।
রিজভী বলেন, আলেম সমাজ যদি অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ বাড়াতে থাকে আমরা যদি দেশে ইসলাম এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সতর্ক সচেতন না হই, আমরা যদি প্রায়োরিটি ইস্যু নির্ধারণ কিংবা করণীয় নির্ধারণে ব্যর্থ হই, তাহলে সেদিন হয়তো আর বেশি দূরে নয় যেদিন আমাদেরও হয়তো নিজ ভূমিতেই নির্যাতিত ফিলিস্তিনীদের ভাগ্যবরণ করতে হবে। সেই আলামত, সে লক্ষণ ক্রমেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুস সালাম, বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা ডা: তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com